প্রতীকী ছবি
চা বাগানের ন্যূনতম মজুরি, সিঙ্কোনা বাগানে মেডিসিন হাব, উত্তরবঙ্গের রেল সংক্রান্ত দাবিদাওয়া, পাহাড় সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান— কী নেই তাঁর বৈঠকে! এক কথায় এ দিন জগৎপ্রকাশ নড্ডা যেন আবির্ভূত হলেন কল্পতরু হিসেবে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দলের কার্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়ে গেলেন, সব হবে। সব পাবে রাজ্য এবং উত্তরবঙ্গ। তবে তার জন্য বিজেপিকে জিতিয়ে আনতে হবে।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘দু’দফায় কেন্দ্রে সরকার চলছে। উত্তরবঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আছেন। পাহাড়ে স্থায়ী সমাধান থেকে চা বাগান, সব ক্ষেত্রে এমন সব উদাহরণ আছে, যাতে বলা যায়— ভোট এলেই মিথ্যাচার ছাড়া নড্ডাবাবুরা, মোদীবাবুরা কিছু করেন না।’’
এ দিন সকালে বাগডোগরায় নামেন নড্ডা। তার পরে পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মালা দেন। আনন্দময়ী কালীবাড়িতে গিয়ে পুজোও দেন। তার পরে বৈঠকে বসেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বদলে উত্তরবঙ্গে বৈঠক করতে এসে জেপি নড্ডা এ দিন প্রথমেই তুলনার তুলাদণ্ডে বসিয়ে দেন কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার এবং রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘মমতা বলেন— হবে না, হবে না, হবে না। এপ্রিলে আপনারা বিজেপিকে ভোট দিয়ে বলুন— হবে, হবে, হবে।’’
কী কী হবে? যেমন রেল। নড্ডা জানান, রেলমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। পুজো হয়ে গেলে উত্তরবঙ্গে বিজেপির সাত সাংসদ গিয়ে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার পরে তাঁদের সব দাবি পূরণ হবে। রাজ্য বন অধিকার আইন চালু না করায়, সেবক-রংপো প্রস্তাবিত রেল প্রকল্পে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের বনাঞ্চলের যে সব পরিবার উচ্ছেদের মুখে পড়ছে, তারা ওই আইনের সুবিধা নিতে পাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘এ কথাও আমি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় উল্লেখ করব।’’ যেমন, চা বাগানে ন্যূনতম মজুরি। নড্ডা জানান, শ্রম আইন সংস্কার করে যাবতীয়কে ৪টি আইনের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। শ্রমিকদের যে ন্যূনতম মজুরি, সেটাই এখন থেকে চা বাগানের শ্রমিকরাও পাবেন। যেমন, পাহাড়। তিনি জানান, লোকসভা ভোটের সময় থেকেই তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, পাহাড়ে দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধান করা হবে। সেখানকার ১১ জনগোষ্ঠীকে তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়া হবে। নড্ডার কথায়, মোদী যেখানে সবাইকে একজোট করেন, মমতা সেখানে বাঁটোয়ারা করেন।
তৃণমূলের পক্ষে বলা হচ্ছে, সবটাই ভোটের আগে চমক। না হলে ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণের যে প্রতিশ্রুতি দেন বিজেপি নেতৃত্ব, তা এখনও মানা হয়নি কেন? পাহাড়ে তো এত দিন ধরে বিজেপিরই সাংসদ রয়েছেন। তা হলে সেখানেই বা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হচ্ছে না কেন? গৌতম দেবের মতো নেতারা বলছেন, সবটাই ভোটের চমক। ভোট হয়ে গেলে তাঁদের আর দেখা পাওয়া যাবে না।