পরিবারের ইরাদ্রী বসু খাউন্ড। নিজস্ব চিত্র।
গত ফেব্রুয়ারিতেই জেইই (মেন্স) পরীক্ষায় রাজ্যে এক নম্বর ‘র্যাঙ্ক’ করে নজর কেড়েছিলেন শিলিগুড়ির ইরাদ্রী বসু খাউন্ড। এ বার রাজ্য জেইই-তে চতুর্থ ‘র্যাঙ্ক’ করেছেন শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বাসিন্দা সেই ইরাদ্রি। বৃহস্পতিবার সেই ফল জানতে পারেন ইরাদ্রী। সেখানে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-এ বুধবার কাউন্সেলিংয়ে উপস্থিত থেকেছেন তিনি। তবে সামনে জেইই (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষার ফল বেরোতে চলেছে। তাতে সফল হলে দেশের বিভিন্ন আইআইটি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেতে পারবেন। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের মতো আরও কয়েক জায়গায় পরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলোর ফলও কয়েক দিনের মধ্যে প্রকাশ পাবে। তাই কোথায় পড়াশোনা করবেন, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েই পড়াশোনা করতে চান ইরাদ্রী। প্রিয় বিষয় অঙ্ক। সে মতোই ভাবনাচিন্তা করছেন তিনি। রাজনীতি নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। ভোট হচ্ছে। তবে তাতে কী হয় তা নিয়ে আগ্রহ কম। বাবা সরবন খাউন্ড মালবাজারের একটি স্কুলের শিক্ষক। মা বৈজয়ন্তী বসু বিউটি পার্লার চালান। ছোটবেলায় হাকিমপাড়ায় রাসবিহারী সরণিতে বাড়ির পাশেই নার্শারি স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। তাঁরা জানালেন, সেখানে নার্সারির পরীক্ষা দিয়েও বেঞ্চ থেকে উঠতে চাননি ইরাদ্রী। এর পরে কেজিতে ভর্তির পরীক্ষা হলে শিক্ষকেরা তাঁকে সেই প্রশ্নও দেন। অনায়াসে তাতে ভাল নম্বর পাওয়ায় কেজিতেই তাঁকে ভর্তি করে নেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। দশম শ্রেণি পর্যন্ত একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা। এর পরে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কোচিংয়ে ভর্তি হন। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পরীক্ষা এবং প্র্যাকটিক্যালের জন্য শুধু একটি স্কুলে ভর্তি হন ইরাদ্রী। এ বছর ৯৪.৪ শতাংশ পেয়ে দ্বাদশে পাশ করেন। সকাল ৮টা থেকে কোচিংয়ে গিয়ে পড়াশোনা শুরু। বেলা দেড়টা নাগাদ ক্লাস শেষ হলেও সেখানেই একটি ঘরে সন্ধ্যা পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এই রুটিন মেনে দিন চলেছে।
কী ভাবে সাফল্য এল? ইরাদ্রীর কথায়, ‘‘আগ্রহ নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। খাটতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা যা বলে দিচ্ছেন সেটা অনুসরণ করতে হবে। অনেকে বাড়তি পড়েন। অতিরিক্ত না পড়ে, যেটা দরকার সেটা বার বার পড়ে তৈরি হতে হবে।’’ ইংরেজি গল্পের বই পড়তে ভালবাসেন ইরাদ্রী। মা বৈজয়ন্তী বলেন, ‘‘শুক্রবারই শিলিগুড়ি ফিরছে। ওর ফলাফলে সকলেই খুশি। কী নিয়ে পড়বে, সেটা ওর উপরেই পুরোটা ছেড়ে দিয়েছি। অভিভাবক হিসাবে আমরা শুধু ব্যবস্থাটা ঠিক মতো করে দেব।’’