—প্রতীকী চিত্র।
রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে নিয়ে এক দিকে বিজেপির অন্দরে অসন্তোষ। আর অন্য দিকে, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদের বেশি ‘গুরুত্ব’ ও ঢালাও ‘পদ’ দেওয়ার প্রতিবাদে বিজেপি নেতাদের একাংশের ইস্তফা দেওয়ার হিড়িক। লোকসভা ভোটের মুখে জোড়া ফলায় বিদ্ধ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা নেতৃত্ব। দলে অসন্তোষের অভিযোগে জেলা জুড়ে দলের ব্লক, বিধানসভা ও জেলাস্তরের নেতাদের একাংশ দলের জেলা ও ব্লক কার্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেন বলে বিজেপি সূত্রের দাবি।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের দাবি, “সক্রিয় কোনও নেতা পদ থেকে ইস্তফা দেননি। দলে গুরুত্ব বিচার করেই সবাইকে পদ দেওয়া হয়।” দেবশ্রী আগেই দাবি করেছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব লোকসভা ভোটে প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। এ নিয়ে জেলায় দলে কোনও সমস্যা নেই। প্রায় সাড়ে তিন বছর দলের জেলা সভাপতি পদে থাকা বিশ্বজিৎ লাহিড়ীকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় বাসুদেবকে ওই পদে বসানো হয়। সেই থেকে বিশ্বজিৎ ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে দেবশ্রী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বাসুদেবের দ্বন্দ্ব লেগে রয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি, বিশ্বজিৎ ও তাঁর অনুগামী নেতারা দেবশ্রীকে ‘বহিরাগত’ বলে উল্লেখ করে তাঁর বদলে জেলার 'ভূমিপূত্র' নেতাকে বিজেপির প্রার্থী করার দাবিতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈঠক করেন।
রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর ও চোপড়ার ৩০ জনের বেশি নেতা ইস্তফা দিতে চেয়ে বাসুদেবের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠান। তাঁদের মধ্যে জেলার বিভিন্ন ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি, জেলা সহ সভাপতি, জেলা সম্পাদক, বিধানসভার আহ্বায়ক, দলের ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতির মতো একাধিক নেতা রয়েছেন। বিশ্বজিতের বক্তব্য, “লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জে জেলার ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করার দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে।”
বিজেপির রায়গঞ্জ ১ মণ্ডলের সভাপতি আনন্দ ভৌমিক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা জুড়ে ভোটের টিকিট পাওয়ার জন্য ও নানা স্বার্থে তৃণমূলের নেতারা বিজেপিতে যোগ দেন। অথচ, বিজেপির জেলা নেতৃত্ব দলের পুরনো নেতা-নেত্রীদের ‘গুরুত্ব’ ও ‘পদ’ না দিয়ে তাঁদের পদ দিচ্ছেন। জেলা জুড়ে বিজেপিতে এর প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।” পঞ্চায়েত ভোটের আগে রায়গঞ্জ ব্লকের রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মলয় সরকার বিজেপিতে যোগ দেন। এর পর তিনি বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জয়ীও হন। মলয় বলেন, “বিজেপি আমার ‘গুরুত্ব’ বুঝে আমাকে কিছু দিন আগে ওবিসি মোর্চার জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে।” মানসকুমার ঘোষ পঞ্চায়েত ভোটের আগে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সহকারী সভাপতি ছিলেন। দল টিকিট দেয়নি। তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান। মানসের বক্তব্য, “কিছু বলব না।”