ফাইল চিত্র।
মহালয়ার আগেই দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ে হোটেল, রেস্তরাঁ চালু করার সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করল দুই জেলা প্রশাসন। যার ফলে শনিবার থেকে পাহাড়ের সব জায়গায় হোটেল, রেস্তোরাঁ খোলা রাখা যাবে। তবে কন্টেনমেন্ট জ়োনে থাকলে সেসব বন্ধই থাকবে।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবল্লম বলেন, ‘‘গত কিছুদিন হোটেল, রেস্তরাঁ মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা হয়েছে। জেলার সমতলে তো হোটেল খোলাই রয়েছে। পাহাড়ে এবার খুলতে পারে।’’ তিনি জানান, সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে হোটেল খোলা রাখতে কোনও অসুবিধা নেই। জিটিএ-র চেয়ারম্যান অনীত থাপা রাতে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
সরকারি এই নির্দেশিকা জারির পর পাহাড়ের হোটেল খোলা নিয়ে যে টানাপড়েন চলছিল তা অনেকটাই মিটল। তবে আদতে বুকিং হবে কি না তা নিয়ে এখনও মালিকেরা অনিশ্চিত। এর পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রগুলি, টাইগার হিল বা ডেলোর মতো দিনে ঘোরার স্পট, হোমস্টেগুলি কী ভাবে চালু হবে তা নিয়ে আলাদা করে নির্দেশিকা নেই। তবে পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, হোটেলের সঙ্গেই হোমস্টে চালু হয়ে যাবে। কিন্তু ঘোরার জায়গাগুলি নিয়ে নিশ্চয়ই প্রশাসন দ্রুত নতুন নির্দেশিকা দেবে বলে মনে করেছেন তাঁরা। পুজোর সময় পাহাড়ে কিছু পর্যটকের দেখা মিলতে পারে বলেও মনে করছেন তাঁরা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ১৫ দিন ধরে জিটিএ, দুই জেলা প্রশাসন, হোটেল, পরিবহণ সংগঠনের প্রতিনিধিরা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল, হোটেল বা হোমস্টে খুলতে গেলেই সাধারণ মানুষেরা বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন। হোটেল মালিককে হুমকি দেওয়া, পর্যটকদের পাহাড় থেকে নামিয়ে দেওয়া, হোটেলে চিঠি দিয়ে বুকিং না নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। তাই নিরাপত্তার অভাবে কেউ আর এগিয়ে আসছিলেন না।
গত সপ্তাহে বণিকসভা সিআইআই-র প্রতিনিধিরা মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে বিষয়টি তোলেন। সেখানে সিআইআই উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জিত সাহা, পর্যটন সংগঠনের প্রতিনিধি হিসাবে রাজ বসু, সম্রাট সান্যালেরা ছিলেন। মুখ্যসচিবের নির্দেশে তাঁরা জেলাশাসকের সঙ্গে কী করণীয় তা নিয়ে বৈঠক করেন। জেলাশাসক সেই রিপোর্ট নবান্নে পাঠান। তার পরে এ দিন পাহাড়ের জন্য নির্দেশিকা জারি হল।
দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিনোদ খন্না বলেন, ‘‘আমরা তো খুলতেই চাইছিলাম। সরকারি নির্দেশিকা থাকায় এ বার সাধারণ মানুষ বিষয়টি বুঝবেন। সমস্যা হলে নিশ্চয়ই প্রশাসন বা জিটিএ-র সাহায্য পাব।’’