অবাক: নিজের বাড়ির সামনে রেপে মুন্ডা। ছবি: রাজকুমার মোদক।
ভাঙা ঘর। তাতেই ঝুলছে ইন্দিরা আবাস যোজনার বোর্ড। বাড়ির মালিক কানাকড়িও পাননি বলে জানাচ্ছেন। অথচ বোর্ডে লেখা হয়েছে ইন্দিরা আবাস যোজনায় নাকি ওই বাড়ির মালিক ৭০ হাজার টাকা পেয়েছেন।
ধূপগুড়ির গাদং ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজিপাড়া গ্রামের মুন্ডাপাড়ায় এই ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বিপিএল তালিকায় থাকা দুই বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘আমরা ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর বা ঘরের জন্যে কোনও টাকা আজ পর্যন্ত পেলাম না। অথচ বাড়িতে না থাকার সময় কে বা কারা আমাদের পুরনো ভাঙা ইন্দিরা আবাস যোজনায় ৭০ হাজার টাকার ঘর পেয়েছি এমন বোর্ড লাগিয়ে রেখে গেল।’’
কাজিপাড়া গ্রামের প্রত্যন্ত মুন্ডাপাড়ায় প্রায় ৫০টি আদিবাসী পরিবারের বাস। ওই গ্রামে অনেক আদিবাসীরাই ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর পেয়েছেন। এলাকার বেশিরভাগ আদিবাসীরাই দিনমজুরি করে কোনও রকমে সংসার চালান।
পিটু মুন্ডা ও রেপে মুন্ডাও ইন্দিরা আবাসের ঘর পাওয়ার অধিকারী হয়েও পাননি। ছয়-সাত মাস আগে একদিন তাঁরা দেখেন দুটি বাড়ির বেড়ায় ৭০ হজার টাকার মূল্যের ঘর ২০১৪-১৫ অর্থ বর্ষে পাওয়ার বোর্ড টাঙানো আছে। তাঁদের ক্ষোভ, “আমরা ঘর বা টাকা কিছুই পাইনি। এতদিন কেটে গেলেও পঞ্চায়েত আমাদের সঙ্গে দেখা করে কিছু বলেনি।” রেপে মুন্ডা আরও বলেন, “ঘর না পাওয়ায় জেলার সভাধিপতির সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানিয়েছি। বিডিও অফিসে জানাতে গেলে সেখানে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয়।”
গাদং ১ নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান অজিত রায় অবশ্য ওই পরিবার দু’টির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ওই পরিবার দুটির প্রথম কিস্তির টাকা শেষ হওয়ার পর, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ব্যাঙ্কে এসে পড়ে আছে। আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি ওরা প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে ঘর তৈরি কাজ শুরু করেছে। ঘরে ইন্দিরা আবাসের বোর্ড বিডিও অফিস থেকে লাগিয়েছে।”
জলপাইগুড়ির এডিএম অম্লানজ্যোতি সাহা বলেন, “এ রকম হওয়ার কথা নয়। আমি তদন্ত করে দেখছি ঠিক কী হয়েছে। প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”