ঐতিহাসিক: ১৯৪৭ সালের ১৮ অগস্ট বালুরঘাট হাই স্কুলের মাঠে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলা হচ্ছে। ফাইল চিত্র (বাঁ দিকে) ওই স্কুল মাঠেই ১৮ অগস্ট উদ্যাপনের প্রস্তুতি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র (ডান দিকে)
১৮ অগস্ট, বালুরঘাটের জন্য বিশেষ দিন। ৭৫ বছর আগে, এ দিন বালুরঘাট হাই স্কুলের মাঠে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে উড়েছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। আজ, বুধবার দিনটি উদ্যাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট দেশের অন্য অংশ ভারতভুক্ত হলেও, বালুরঘাট ‘নোশনাল’ (ধারণাগত) এলাকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে জেলার ইতিহাস গবেষক সমিত ঘোষ জানান। ফলে, ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন এখানে সরকারি ভাবে ভারতের জাতীয় পতাকা ওঠেনি। জেলা কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অঞ্জন চৌধুরী জানান, মহিলা কংগ্রেসের নেতৃত্বে বালুরঘাটের কংগ্রেস পাড়ায় জাতীয় পতাকা তোলা হয়। পাশাপাশি, এই এলাকার ভারতভুক্তির জন্য তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্ব উপর মহলে দাবি জানাতে থাকেন। বালুরঘাটের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের বীরগাথাও দিল্লির নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হন তৎকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা।
অবশেষে, ১৯৪৭ সালের ১৭ অগস্ট গভীর রাতে সরকারি ভাবে বালুরঘাট ও অন্য কয়েকটি এলাকা ভারতে অন্তর্ভুক্ত হল বলে ঘোষণা হয়। সে খবর পেয়ে, উল্লাসে মেতে ওঠেন এলাকার নাগরিক সমাজ। তার আগে, বালুরঘাট হাই স্কুল মাঠে পাকিস্তানের পতাকা তোলা হয়েছিল বলে প্রবীণ বাসিন্দারা জানান।
১৯৪৭ সালের ১৮ অগস্ট সকালে বালুরঘাটে ৪২-এর স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁর নেতৃত্বে বালুরঘাট হাই স্কুল মাঠে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলা হয়। হাই স্কুলের মধ্যে ছাউনি করে থাকা পাকিস্তানের সেনারা ধীরে ধীরে আস্তানা গুটিয়ে ফিরে যান।
আজ, বুধবার, বালুরঘাটে ঐতিহাসিক ১৮ অগস্টকে স্মরণ করে অনুষ্ঠান হবে। বালুরঘাটের একটি পরিবেশ বান্ধব সংগঠনের উদ্যোগে বালুরঘাট হাই স্কুল মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সংগঠনের প্রতিনিধি তুহিনশুভ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে ৬টায় শহরের গান্ধী মূর্তির সামনে জমায়েত। তার পরে, সকাল ৭টায় সাইকেল র্যালি করে ডাঙ্গি সীমান্তে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের স্মারক স্তম্ভে পৌঁছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। এর পরে সকাল ৮টায় বালুরঘাট হাই স্কুল মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে।’’ দিনভর দিনটির উদ্যাপনে আরও অনুষ্ঠান হবে।