এই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকার পদে যোগ দেওয়ার কথা শান্তার। নিজস্ব চিত্র।
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও স্কুলে এলেন না শিক্ষিকা শান্তা মণ্ডল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে তাঁকে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের যোগদানের নির্দেশ দিয়েছিল জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি কাজে যোগ দেননি। এ ব্যাপারে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নীতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। উনি আজ কাজে যোগ দেননি। ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল উনি এই স্কুল থেকে চলে যান।’’
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাই স্কুলের শিক্ষিকা শান্তা ২০১৯-এ বীরপাড়া গার্লস হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা পদে নিয়োগপত্র পান। স্কুলে যোগ দেওয়ার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে শান্তা আবার বদলির জন্য রাজ্যের শিক্ষা দফতরে আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর করে মধ্যশিক্ষা পর্যদ ২০২০-র ২২ ডিসেম্বর তাঁকে শিলিগুড়ির অমিয়গোপাল চৌধুরী স্মৃতি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা পদের নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু শান্তা ওই স্কুলে যোগ দেননি। তিনি আবার শিক্ষা দফতরে বদলির আবেদন জানান এবং আবারও তা মঞ্জুর হয়। তার পর বীরপাড়া থেকে শান্তা শিলিগুড়ি শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা পদে নিয়োগপত্র পান।
এই বদলি প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শিলিগুড়ি শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রসূনসুন্দর তরফদার। বৃহস্পতিবার এই মামলায় শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাই স্কুলে শান্তার নিয়োগপত্র বাতিল করে বিচারপতি নির্দেশ দেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে বীরপাড়া গার্লস হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা পদে যোগ দিতে।
এ নিয়ে নীতা বলেন, ‘‘৪-৫ বছরে এত বার বদলি কোনও নিয়মের মধ্যে পড়ে না।’’ তা হলে এখন কী হবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা আদালতের বিচার্য বিষয়। আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। ওঁর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও হয়নি।’’ একই কথা জানায় স্কুলের পরিচালন সমিতিও। পরিচালন সমিতির সদস্য ত্রিদিব চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা কিছু জানি না। খবর দেখেই এসেছি। এটা আইনের বিষয়। আমাদের কাছে সরকারি নির্দেশ আসেনি।’’
উল্লেখ্য, শিক্ষিকা শান্তা মন্ডলের ‘রহস্যজনক বদলি’ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ।