প্রতীকী ছবি।
মালদহে মাদকের কারবারে জড়িতদের ধরপাকড় চলছেই। গত কয়েকদিন ধরে ইংরেজবাজার শহরে ব্রাউন সুগারের কারবারে জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু সূত্রের খবর, যাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তাঁরা মাদকের ‘সাপ্লায়ার’ হিসেবেই পরিচিত। অভিযোগ, মাদক কারবারের মূল মাথারা কিন্তু অধরাই থাকছে। গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে, কালিয়াচকের বিভিন্ন ডেরায় ভিন্ রাজ্য থেকে আনা পোস্তর আঠা প্রক্রিয়াকরণ করেই ব্রাউন সুগার তৈরি চলছেই। আর অভিযোগ, এই কারবার রীতিমতো ছড়িয়ে পড়েছে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ শহর থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন গ্রামে-গঞ্জে। এখন প্রশ্ন উঠছে, জেলায় এই ব্রাউন সুগারের কারবার কি আদৌ চিরতরে বন্ধ হবে? পুলিশ অবশ্য জানাচ্ছে, এই কারবার বন্ধ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
এক সময় কালিয়াচক সংলগ্ন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে বেআইনি পোস্ত চাষের রমরমা ছিল। অভিযোগ, সেই সময় থেকেই পোস্তর আঠা থেকে মাদক ব্রাউন সুগার তৈরির রমরমা কারবার শুরু হয় কালিয়াচকের মোজমপুর, নারায়ণপুর, কিসমতপুর, বালুয়াচরা, জালুয়াবাধাল প্রভৃতি এলাকায়।
কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে পুলিশ, প্রশাসন ও আবগারি দফতর যৌথ উদ্যোগ নিয়ে বেআইনি পোস্ত চাষ জেলায় বন্ধ করে বলে দাবি রয়েছে। এই মাদকের কারবারে জড়িত একাধিক ‘মাথা’কেও গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের এখন কেউ জেলে বা কেউ আদালতের নির্দেশে জামিনে রয়েছেন। মাদকের চোরা কারবারে এখন নতুন ‘মাথা’রা দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। সে কারণে, জেলায় পোস্ত চাষ বন্ধ হলেও ব্রাউন সুগার তৈরির কারবার বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।
এখন মণিপুর থেকে নিয়ে আসা পোস্তর আঠা প্রক্রিয়াকরণ করে ব্রাউন সুগার তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর সেই মাদক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, এমনকী গোটা মালদহ জেলা জুড়ে। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছে যুব সমাজের একাংশ। জেলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন বাসিন্দারা চাইছেন, মূল ঘাঁটি থেকেই এই মাদক তৈরির কারবার বন্ধ করা হোক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইংরেজবাজার শহরের মাধবনগরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সন্ধ্যার দিকে বাঁধরোডে গেলেই দেখা যায় যে, যুব সমাজের একাংশ কীভাবে ব্রাউন সুগারের নেশায় আসক্ত হয়ে থাকছে। এই কারবার বন্ধ না হলে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে।’’
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ব্রাউন সুগারের কারবারিদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান শুরু হয়েছে। এই কারবারের সমস্ত সাপ্লাই চেন আমরা ভেঙে দিতে চাইছি।’’