পার্কিংয়ের অব্যবস্থা শিলিগুড়ি শহর জুড়েই। তার উপর পুরসভার অধীনে থাকা পার্কিংয়ের জায়গাগুলির একাংশে অবৈধ ভাবে ফি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
শহরের মধ্যে বেশ কিছু জায়গা পার্কিংয়ের জন্য চিহ্নিত করে পুরসভার তরফে বরাত দেওয়া হয়। একাধিক জায়গায় বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা ছেড়ে দেওয়ায় সেগুলি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। অথচ সেগুলি থেকে মাঝেমধ্যেই পার্কিং ফি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার মধ্যে রয়েছে সেবক মোড় থেকে সেবক রোড বরাবর রাস্তার বাঁ দিকে গুরুদ্বার পর্যন্ত পার্কিংয়ের জায়গা এবং পানিট্যাঙ্কি মোড় থেকে সেবক রোড় বরাবর বাঁ দিকে পার্কিংয়ের জায়গার একটি জোন।
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঠিকাদাররা ওই দু’টি জোন চালাতে না পেরে ছেড়ে দেয়। সেই থেকে ওই দু’টি জোনে পার্কিং ফি সংগ্রহের ব্যাপার নেই। অথচ তা সত্ত্বেও মাঝে মধ্যে কিছু লোক সেখান থেকে পার্কিং ফি তুলছে বলে অভিযোগ ওঠে। কয়েক জন কাউন্সিলরও তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। এমনকী বেশ কিছু পার্কিং থেকে নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ দুর্গা সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নজরদারির জন্য পুলিশকেও বলা হয়েছে। ওই দু’টি জোনের ঠিকাদার আচমকা ছেড়ে দেওয়ায় সমস্যা হয়েছে। অন্য জোনগুলির মেয়াদও মার্চ মাসে শেষ হয়ে যায়। ভোটের জন্য সেগুলি তিন মাস করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। জুন মাসে সেই মতো মেয়াদ শেষ হবে। তার আগেই নতুন করে বরাত দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।’’ মেয়র পারিষদের দাবি, জুন মাসের মধ্যে নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়া সেরে বরাত দেওয়া হলে সমস্যা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে কেন ওই দু’টি পার্কিং জোন নতুন করে বরাত দেওয়া হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পার্কিং বিভাগের এক আধিকারিক জানান, নতুন পুরবোর্ডের আগে প্রশাসক থাকার সময় এক বার টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়। সে সময় আগের চেয়ে দর কম হওয়ায় পুরসভার তরফে ওই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়। নতুন পুরবোর্ড আসার পর টেন্ডার হয় জুনে। কিন্তু সে সময় বরাতের টাকার উপর সার্ভিস ট্যাক্স আদায় করা হবে বলে নতুন নিয়ম চালু হয়। তাতেই সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে ওই দু’টি জোনের ঠিকাদাররা ছেড়ে দেন।
শহরে ১৮টি পার্কিং জোন রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি জোন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বাকিগুলির মেয়াদ ৩ মাস করে বাড়ানো হয়েছে ভোটের জন্য। পুরনো দরেই তারা টাকা দিচ্ছে। তাতেও পুরসভার কিছুটা আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল বলেন, ‘‘পার্কিংয়ের অনেক জায়গা থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে। আবার কোথাও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। অথচ ওই সব জায়গা থেকেও পার্কিং ফি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ দিন পুরসভার বেশ কিছু পার্কিংয়ের জায়গা কোনও ঠিকাদার না চালানোয় ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তাতে পুরসভার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।’’
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, এ সব নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে তাঁরা একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছেন। পুরসভা বিষয়টি দেখছে না।