পণের দায়ের বধূ খুনে কারাদণ্ড রায়গঞ্জে

পণের টাকা চেয়ে না পাওয়ায় এক বধূকে দীর্ঘ দিন ধরে নির্যাতন করে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করার দায়ে মৃতার স্বামী ও শাশুড়ীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রায়গঞ্জের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড আদালত। একই অপরাধে মৃতার শ্বশুর ও দেওরকেও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের দু’হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে প্রত্যেকের সাজার মেয়াদ আরও দু’মাস করে বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪১
Share:

পণের টাকা চেয়ে না পাওয়ায় এক বধূকে দীর্ঘ দিন ধরে নির্যাতন করে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করার দায়ে মৃতার স্বামী ও শাশুড়ীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রায়গঞ্জের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড আদালত।

Advertisement

একই অপরাধে মৃতার শ্বশুর ও দেওরকেও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের দু’হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে প্রত্যেকের সাজার মেয়াদ আরও দু’মাস করে বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রায় দিয়েছেন বিচারক সুলগ্না ঘোষ দস্তিদার। সাজাপ্রাপ্তদের নাম বিপুল মণ্ডল, তুলসি মণ্ডল, মহিন্দর মণ্ডল ও মুকুল মণ্ডল। সাজাপ্রাপ্তদের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার ঠিলবিল এলাকায়।

সরকারি আইনজীবী রোহিনীকুমার দত্ত জানান, গত প্রায় আট বছর ধরে আদালতে মামলা চলেছিল।

Advertisement

পুলিশ, চিকিত্সক, প্রতিবেশী-সহ মোট ১৩ জনের সাক্ষী ও উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সাজাপ্রাপ্তরা ওই বধূর উপরে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী অলোক ঝা আদালতের রায় ও সাজাপ্রাপ্তরা নির্দোষ কি না সেই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম তাপসী বসাক (মণ্ডল)। ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল ২৪ বছর বয়সী তাপসীদেবীর ঝুলন্ত মৃতদেহ তাঁর শ্বশুরবাড়ির শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয়।

ওই ঘরের টিনের চালার নীচে থাকা একটি বাঁশ থেকে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনার পর ইটাহারের বসরতপুর এলাকার বাসিন্দা মৃতার বাবা শিবু বসাক মেয়ের স্বামী, শাশুড়ি, শ্বশুর ও দেওরের বিরুদ্ধে ইটাহার থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের ওই দিনই গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে পুলিশ। প্রায় তিনমাস জেল হেফাজতে থাকার পর আদালতে নির্দেশে তারা জামিনে ছাড়া পায়।

সরকারি আইনজীবী রোহিনীবাবু জানান, ২০০২ সালে তাপসিদেবীর সঙ্গে বিপুলবাবুর বিয়ে হয়! বিয়ের পর থেকেই স্বামী, শাশুড়ী, শ্বশুর ও দেওর বাপের বাড়ি থেকে টাকা চেয়ে তাপসীদেবীর উপর নির্যাতন চালাত। এমনকী, ওই বধূকে পুড়িয়ে মারারও চেষ্টা হয়। শেষপর্যন্ত টাকা না পেয়ে অভিযুক্তেরা তাপসীদেবীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে আদালতে প্রমাণ হয়। মৃতার ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। রোহিনীবাবু বলেন, অপরাধের জড়িত থাকার কমবেশি যোগের ভিত্তিতে সাজাপ্রাপ্তদের সাজার মেয়াদের সময়সীমা ঘোষণা করেছে আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement