বিধি উড়িয়ে: শিলিগুড়ি ফুলেশ্বরী মাছ বাজারে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। রবিবার। ছবি: স্বরূপ সরকার
শনিবার পূর্ণ লকডাউনের দিন বাজার বন্ধ ছিল, রাস্তায় দেখা যায়নি কোনও বাসিন্দাকে। কিন্তু রবিবার বাজার দেখলে বোঝার উপায় নেই যে আগেরদিনই শহরে ওই ছবি ছিল। এ দিন বাজারে মাছ-মাংসের দোকানে পা ফেলার জায়গা ছিল না। বিভিন্ন বাজারে যথেচ্ছভাবে লকডাউন বিধি এবং শারীরিক দূরত্ব বিধি উপেক্ষা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিভিন্ন বাজার ঘুরে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। কিন্তু বাজার ছেড়ে বেরোতেই আবার বাজার আগের অবস্থায় ফিরে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীদেরই একটি অংশের দাবি, বাজারে স্থায়ীভাবে পুলিশ পিকেট থাকুক।
সুভাষপল্লি মাছ বাজার বেলা ১১ টার পরেও পুরোমাত্রায় সচল ছিল। বাজারে বেশ কয়েকজন বিক্রেতাকে আগের মতোই গলায় বা থুতনিতে মাস্ক নামিয়ে রাখতে দেখা গিয়েছে। তবে প্রায় সব ক্রেতার মুখেই মাস্ক দেখা গিয়েছে। কিন্তু বাজারের একফালি গলিতে ঠেলাঠেলি-ধাক্কাধাক্কি চলে দুপুর পর্যন্ত। এই বাজারের মাংসের দোকানেও এ দিন ভিড় ছিল। পাশেই রথখোলা আনাজ বাজারের গলিতে মাঠে বসেন মুরগি এবং মাছ বিক্রেতারা। রবিবার বাজারে মুরগির দোকানের সংখ্যাও বেড়ে যায়। এখানেও স্বাস্থ্যবিধি কেউই মানছেন না বলে অভিযোগ। রবীন্দ্রনগর- রথখোলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত কুণ্ডু বলেন, ‘‘পুলিশ বলেছে, ভিড় হলেই ফোন করতে। কিন্তু কতবার ফোন করব?’’ বাজারে পাকাপাকিভাবে নজরদারির জন্য দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। রবীন্দ্রনগর মোড় এলাকায় এক বৃদ্ধা করোনায় মারা গিয়েছেন বলে ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রে দাবি করা হয়। তার জন্য সোমবার থেকে তিন দিন ওই বাজার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ঘোঘোমালি বাজারে মাংসের দোকানে এ দিন ভিড় জমিয়েছিলেন ক্রেতারা। কিছুদিন আগেই এই বাজারের এক ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হন। পুলিশের অভিযান চলে ফুলেশ্বরী বাজার এবং আশ্রমপাড়া মাছ বাজারে। আশ্রমপাড়া বাজারে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করার জন্য এক মাছ বিক্রেতার ওজন যন্ত্র কেড়ে নেয় পুলিশ। ওই বিক্রেতার দাবি, টানা মাস্ক পরে কাজ করা যাচ্ছে না। ফুলেশ্বরী, শান্তিনগর, জলেশ্বরী, বিধান মার্কেট সব জায়গাতেই একই ছবি দেখা গিয়েছে রবিবার।
শিলিগুড়ির পুলিশকর্তারা অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ মানছেন না। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি সদর নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘শহরের প্রতিটি বাজারে নজরদারি, অভিযান এবং টহলদারি করা হয়েছে। কিছু জায়গায় পিকেটিংও রাখা হয়েছে। গ্রেফতারি হচ্ছে। আর কতটা কড়া হবে পুলিশ?’’