চড়া দাম পেঁয়াজের। —ফাইল চিত্র।
আনাজ-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির অভিযোগের প্রতিবাদে কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন বাজারের সামনে আন্দোলন করে একটি রাজনৈতিক দল। ঘটনাচক্রে, ওই দিনই আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রায়গঞ্জের একটি বাজারে অভিযান চালায় টাস্ক ফোর্স। অভিযানকারী ওই দলে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা ছিলেন। কিন্তু, কোথায় কী? তার পর থেকে আনাজের দাম কমা তো দূরের কথা, উল্টে বেড়েই চলেছে। এটা শুধু রায়গঞ্জ নয়। উত্তরবঙ্গ, গোটা রাজ্য জুড়ে এই পরিস্থিতি। বিশেষ করে, পেঁয়াজের দাম কিছুতেই কমছে না। রায়গঞ্জ-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে বহুদিন ধরে কেজি-প্রতি পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। রসুনের দাম কেজিপ্রতি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। অথচ, এই পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া সংসারের প্রাত্যহিক রান্না ভাবাই যায় না। সেই পেঁয়াজের দাম এতটাই চড়া যে রাস্তার ধারে হোটেল ও ধাবায় গেলে আরও বোঝা যায়। সাধারণত, হোটেল ও ধাবাগুলিতে ভাত ও রুটির সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ দেওয়া হয়। কিন্তু, যতদিন যাচ্ছে বেশিরভাগ হোটেল ও ধাবায় ভাত ও রুটির সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ প্রায় বন্ধ। ধাবায় পেঁয়াজ ছাড়া খাবার ভাবা যায়!
পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে তেলেভাজার দোকানগুলিতেও সঙ্গে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে না। পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি পেঁয়াজি-সহ বিভিন্ন তেলেভাজার দামও বেড়ে গিয়েছে। রসুনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। তাই, মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষের জন্য পেঁয়াজ ও রসুনের দাম দ্রুত কমানো উচিত বলে আমার মনে হয়।
টাস্ক ফোর্স কী করছে, বুঝতে পারছি না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজ ও রসুন ভিন রাজ্যে থেকে আসে, তাই পাইকারি বাজারে সেগুলির দাম বাড়ার কারণে ও পরিবহণ খরচ বাড়ার জেরে সেগুলির দাম বাড়ছে। তা ছাড়া, চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ার কারণেও পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বাড়ছে বলে অনেকে বলছেন।
তাই, কৃষি দফতরের কাছে আমার আবেদন, ভবিষ্যতে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে উত্তর দিনাজপুর জেলা-সহ উত্তরবঙ্গ জুড়ে পেঁয়াজ ও রসুনের চাষ বাড়ানো হোক। সেই সঙ্গে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম কমাতে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বাজারগুলিতে টাস্ক ফোর্স অভিযান করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। প্রয়োজনে এই অকারণে দাম বৃদ্ধির পিছনে যারা আছে, তাদের চিহ্নিত করে জরিমানা করার পদক্ষেপ করুক প্রশাসন।
(চা বিক্রেতা, রায়গঞ্জ)