পর্যালোচনা বৈঠক ডাকছে রাজ্য সরকার। — ফাইল চিত্র।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের শুরুতেই প্রথম বার পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর পর্যালোচনা বৈঠক ডাকছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে নবান্নে রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। বৈঠকে পাহাড়ের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জিটিএ-র পর্যালোচনা বৈঠক, পাহাড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে জিটিএ-র সমন্বয় সাধনের সরকারি ব্যবস্থা নিয়ে তাঁদের মধ্যে মূলত কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আগামী মাসের শুরুতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকার নেতৃত্বে পাহাড়ে জিটিএ-র বৈঠক হবে। আইনে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবই দার্জিলিং পাহাড়ের জিটিএ-র নোডাল অফিসার।
বৈঠক নিয়ে জিটিএ প্রধান অনীত থাপা কোনও মন্তব্য করেননি। তবে জিটিএ-র শীর্ষ স্তরের অফিসার বলেছেন, ‘‘মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকটি একেবারে শীর্ষস্তরের প্রশাসনিক বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও জিটিএ প্রধানের কথা হয়েছে। সবই সরকারি বিষয়। প্রকাশ্যে বলার মতো নয়।’’ জিটিএ নির্বাচনে অনীতেরা বিপুল ভাবে পাহাড়ে ক্ষমতায় এসেছেন। সেখানে সরকারি অর্থে অনেক কাজ শুরু হয়েছে। সেই সব কিছুরই পর্যালোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
২০১১ সালে বিমল গুরুংকে আন্দোলন থেকে সরিয়ে এনে রাজ্য ও কেন্দ্র মিলে জিটিএ গঠন করে। পার্বত্য পরিষদ পাহাড়ে শেষ হয়ে যায়। গুরুং জিটিএ-র মাথায় বসেন। ২০১৭ সাল অবধি গুরুং জিটিএ চালান। কিন্তু ওই বছর জিটিএ-র অডিট শুরু হতেই পাহাড়ে ভাষা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। পরে তা রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে পরিণত হয়। অভিযোগ, প্রাথমিক পর্যালোচনাতেই সরকার জিটিএ-র বেশ কিছু অনিয়ম পায়। বিশেষ দল গঠন করে অডিট চালানো হয়। ২০১৭ সালে গুরুং পাহাড় ছাড়তেই অনীতেরা ক্ষমতায় আসেন। প্রথমে বিনয় তামাং এবং পরে অনীত জিটিএ-র মাথায় নির্বাচিত হয়ে বসেন। জিটিএ সভা হওয়ার পরে রাজ্য সরকার এ বার কাজ পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জিটিএ-র অফিসারেরা জানান, জিটিএ আইনে এই পর্যালোচনার কথা রয়েছে।
এ দিনই রাজ্য মন্ত্রিসভা জিটিএ এলাকায় ভূমিসংস্কার দফতর হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বহু দিন ধরেই অনীত এবং কালিম্পঙের বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা কলকাতায় বিভিন্ন স্তরে এই দাবি জানাচ্ছিলেন। বিশেষ করে, পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় জেলাশাসকদের অধীনে ‘ডিস্ট্রিক্ট ইভপ্রুভমেন্ট’ এলাকা রয়েছে। সেখানে বসবাসকারীদের জমির অধিকার দেওয়ার দাবি ছিল। পাহাড়ে ভূমিসংস্কার দফতর এসে গেলে জমির মালিকানা প্রদানের কাজ শুরু হবে।
কালিম্পঙের বিধায়ক বলেন, ‘‘আমার জমি আমার অধিকার— এই স্লোগান ভোটের সময় দিয়েছি। আমাদের প্রতিশ্রুতি পাহাড়ে পালন করে চলেছে। এ বার ভূমিসংস্কার দফতরও হস্তান্তর করা হবে। তার পরে জমির মালিকানা দেওয়া হবে। পাহাড়বাসীর কাছে এটা বিরাট সুখবর।’’