প্রচার-মুখী: সারা দিন এ ভাবেই মিরিক দেখল নানা দলের ভোট-যাত্রা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
প্রচারের মাঝেই কোনও নেতা উঁকি দিলেন হেঁসেলে। কেউ বা শেলরুটি এবং চা নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বসলেন মোড়ের চায়ের দোকানে। পুরসভার শাসকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে গান বেঁধে কোনও পাড়ায় শোনানো হল। কোথাও বা গিটার নিয়েই মিছিলে বেরিয়ে পড়লেন কর্মীরা। পুরভোটের আগে প্রচারের জন্য এ দিনই ছিল শেষ রবিবার। দার্জিলিং থেকে কালিম্পং, মিরিক থেকে কার্শিয়াং—পাহাড়ের যুযুধান দলের নেতাদের স্বাভাবিক ভাবেই দিনভর একটুও জিরিয়ে নেওয়ার সুযোগটুকু আসেনি। এ পাড়ার প্রচার সেরেই ছুটতে হয়েছে ও পাড়ায়। ছুটির দিন হওয়ায় জনসংযোগের সুযোগ ছাড়তে চাননি কর্মী-সমর্থকরা।
হাতে বেশি সময় নেই। তাই দার্জিলিঙের বাড়ি-বাড়ি প্রচার শুরু করেছেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। বিকেলের পরে পাহাড়ে প্রচারে সাড়া মেলে না। এ দিন অর্ধেক প্রচার সেরে দুপুরে খাওয়ার সময় বেশি সময় নষ্ট করতে চাননি গৌতমবাবু। লামাহাটা গ্রামের এক সমর্থকের অনুরোধে তাঁর বাড়িতেই দুপুরের খাওয়া সেরেছেন মন্ত্রী। ভাত, ডাল, আলুর দম। খাওয়ার পরে ফের পদযাত্রা। এ দিন ১৬ এবং ৩২ দুই ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন মন্ত্রী। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘রবিবারের প্রচার অনেক ভাল হয়। সকলকে বাড়িতে পাওয়া যায়।’’
কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রীর কাছেও রবিবার ছিল ‘ভোজনং যত্রতত্র’। সকালের খাওয়া সেরেছেন রাস্তার পাশের দোকানে। দুপুরেও কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শেলরুটি-চা খেয়েছেন জন আন্দোলন পার্টির সেনাপতি হরকা। জাপের তরফেও ছুটির দিন বলে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে জোর দেওয়া হয়। হরকা কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় যান। দার্জিলিঙে মোর্চার কর্মীরা এ দিন মিছিল করেছেন কয়েকটি ওয়ার্ডে। মিছিলের সামনে ছিলেন গিটার হাতে যুবকের দল। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির কথায়, ‘‘উৎসবের মেজাজে প্রচার চলছে।’’ এ দিন মিরিকে তৃণমূলের মিছিলে ভিড় উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেতারা। মিরিকে দলের পর্যবেক্ষক শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে মিরিকে মিছিল হয়। সৌরভবাবু বলেন, ‘‘মিছিলে এত ভিড় হবে তা আমরাও আগে বুঝতে পারিনি। মানুষ স্বতস্ফুর্ত ভাবে এসেছে।’’ মিছিলের শেষে মিরিকে সভা করেছেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। এ দিনই কালিম্পঙে পৌঁছেছেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। পৌঁছেই প্রচার শুরু করেছেন তিনি।
রবিবারের এতটুকু সময় নষ্ট করতে চায়নি কোনও পক্ষই।