গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মোর্চার আলোচনায় নানা আঞ্চলিক দল

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট ছোট দলকে পাশে সামিল করতে আসরে নেমেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সোমবার ‘গোর্খাল্যান্ড’ নিয়ে দাজির্লিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চে দুই দিনের জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করেছে মোর্চার স্টাডি ফোরাম। একটি কমিটি গঠন করে সম মনোভাবাপন্ন দলগুলির সাংসদদের এক সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৬
Share:

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট ছোট দলকে পাশে সামিল করতে আসরে নেমেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সোমবার ‘গোর্খাল্যান্ড’ নিয়ে দাজির্লিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চে দুই দিনের জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করেছে মোর্চার স্টাডি ফোরাম।

Advertisement

একটি কমিটি গঠন করে সম মনোভাবাপন্ন দলগুলির সাংসদদের এক সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। মূলত রাজ্যের বাইরে নিজের আন্দোলনের সমর্থনে অন্য দলগুলিকে নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টির জন্যই মোর্চা এই সেমিনারের আয়োজন করে বলে দলীয় সূত্রের খব।

এদিনের সেমিনারে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সাংসদ কেশব রাও, সিকিমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নরবাহাদুর ভান্ডারি, উত্তরাখন্ডের ক্রান্তি দলের সভাপতি কাশি সিংহ আইরি ছাড়াও বিজেপি-র প্রাক্তন সাংসদ তথা জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য টাপির গাও ছাড়াও আদিবাসী নেতা জন বার্লা উপস্থিত ছিলেন। মোর্চার হয়ে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি ছাড়াও ত্রিলোক দেওয়ান, স্বরাজ থাপারা।

Advertisement

সেমিনারে সিকিমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নরবাহাদুর ভান্ডারি বলেন, ‘‘এই সময়টা খুবই ভাল। কেন্দ্রে বিজেপির সরকার রয়েছে। মোর্চার সঙ্গে বিজেপি-র ভাল যোগাযোগও রয়েছে। তা বলে চুপচাপ বসে থাকলে চলবে না। গোর্খাল্যান্ড এমনি এমনি হয়ে যাবে না। মোর্চা সভাপতির নেতৃত্বে ‌একটি কমিটি গঠন করতে হবে। যাঁরা দিল্লিতে ওই দাবিতে সরব হবে।’’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সবার এটা জানা দরকার, দার্জিলিং কোনও দিনই পশ্চিমবঙ্গের অংশ ছিল না। সিকিম ব্রিটিশদের দার্জিলিং লিজে দিয়েছিল।

মোর্চা নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই আলাদা রাজ্যের চাবিকাঠি রয়েছে। রাজ্য সরকার না চাইলেও কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে বিল এনে তা করতে পারেন। সেই পথেই যাতে কেন্দ্র যায়, সেই চেষ্টাই শুরু করা হয়েছে। সেখানে সাংসদদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তাই দিল্লিতে ওই দাবি জোরাল করতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিকে আরও বেশি করে পাশে পেতেই ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে তেলেঙ্গানার রাষ্ট্রীয় সমিতির কেশব রাও জানান, গোর্খাল্যান্ড তৈরি একদিন হবেই। আলাদা রাজ্য হওয়ার জন্য যা যা দরকার, দার্জিলিঙে তা সবই রয়ে‌ছে। এর জন্য মোর্চা নেতাদের উচিত বিভিন্ন দলের সাংসদদের নিয়ে জাতীয় স্তরে একটি কমিটি গঠন করে দিল্লিতে লাগাতার প্রচার-আন্দোলন সংগঠিত করা। তাঁদের ১৭ জন সাংসদ মোর্চার সঙ্গে থাকবে।

বিজেপি-র টাপির গাও জানান, তিনি বিজেপি-র প্রতিনিধি হয়ে সেমিনারে যোগ দেননি। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এসেছি গোর্খাল্যান্ডের সমর্থক হিসাবে। দাবি পূরণের জন্য মোর্চাকে এর জন্য জাতীয় স্তরে কাজ করতে হবে। শুধুমাত্র বিজেপির স্থানীয় সাংসদ বা প্রধানমন্ত্রীর উপর ভরসা করে বসে থাকলে হবে না। ৪৫ জন জিটিএ সদস্যের প্রত্যেককে ২-৩ জন সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমর্থনের ভিত্তি তৈরি করতে হবে। আবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরনের সেমিনারও করতে হবে।’’ উত্তরাখন্ড ক্রান্তি দলের তরফে মোর্চাকে পুরোপুরি সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে কাশি সিংহ আইরি জানান, গণতান্ত্রিক এবং শান্তিপূ্র্ণভাবে আন্দোলন টানা চালিয়ে যেতে হবে।

সেমিনারে বক্তরা পাহাড়ের জনজাতিদের আলাদা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য-সহ নানা দিক তুলে ধরেন। মোর্চার স্টাডি ফোরামের পক্ষে স্বরাজ থাপারা বলেন, ‘‘এদিনের সেমিনারে নানা পরামর্শ উঠে এসেছে। আমরা সবই মাথায় রাখছি। সবার পরামর্শ নিয়েই আগামীদিনের কর্মসূচি তৈরি হবে।’’ আজ, মঙ্গলবার সেমিনারের দ্বিতীয় দিন, বিজেপির সুব্রহ্মমনিয়ম স্বামী, ইন্ডিয়া তিব্বত সহায়ক সঙ্ঘের রোহিত চড্ডা, সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের অভিজিৎ মজুমদার, অসমের তেজপুরের সাংসদ আরপি শর্মার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement