নেত্রী চাইলে শিলিগুড়িতেই

গত মাস থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন গৌতম। এ দিন মাল্লাগুড়িতে নিজের দফতরে বসে ফেসবুক লাইভ করার সময়ে নানা পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। তার  ফাঁকেই ভোটের লড়ার কথাও জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫০
Share:

পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।

দল এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলে শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করতে পারেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। শনিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়িতে নিজের দফতরে বসে ফেসবুক লাইভে এমনই মন্তব্য করেছেন গৌতমবাবু।

Advertisement

গত মাস থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন গৌতম। এ দিন মাল্লাগুড়িতে নিজের দফতরে বসে ফেসবুক লাইভ করার সময়ে নানা পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। তার ফাঁকেই ভোটের লড়ার কথাও জানান।

যা শোনার পর শিলিগুড়ি শহরে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, আগামিবার অর্থাৎ ২০২১ সালে গৌতমবাবু পাশের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্র নয়, শিলিগুড়ি থেকেই লড়াই করার প্রস্ততি নিচ্ছেন। তা হলে বামফ্রন্ট অশোক ভট্টাচার্যকে আর এক দফায় টিকিট দিলে, লড়াইটা সরাসরি অশোক-গৌতমের মধ্যে হয়ে দাঁড়াবে। তবে এখনও তিন বছর বাকি। তার মধ্যে মহানন্দা আর তিস্তা দিয়ে অনেক জল বয়ে যাবে। তাই এখনই এই নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে সকলেই নারাজ।

Advertisement

গৌতমবাবু এ দিন বলেন, ‘‘অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করছেন, আমি কেন শিলিগুড়ি কেন্দ্র থেকে লড়াই করি না। আসলে সবাইকে বুঝতে হবে, আমরা একটি দলের সৈনিক। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দল চাইলে আমি শিলিগুড়ি কেন্দ্রেও লড়তে পারি। তবে পুরোটাই দলীয় বিষয়। এ ক্ষেত্রে আমার কোনও পছন্দ নেই।’’

এর পরেই তিনি জানান, ‘‘আমি শিলিগুড়ি পুরসভার চার বারের কাউন্সিলর ছিলাম। ১৯৭৮ সালে শিলিগুড়ি কলেজে ভোটে জিতে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। শিলিগুড়ি আদালতে আমি আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছি। শিলিগুড়ি আমার জন্ম এবং কর্মস্থান। তাই দলে আমাকে শিলিগুড়ির জন্য মনে করলে, কোনও সমস্যাই নেই।’’

২০১১ সালে প্রথমে শোনা গিয়েছিল, শিলিগুড়ি কেন্দ্রে গৌতমই প্রার্থী হবেন। পরে তাঁরই বাছাই চিকিৎসক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করে দল। রুদ্রবাবু ‘পরিবর্তনের ঝড়ে’ অশোকবাবুকে হারান। গত ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ককে ভাইচুং ভুটিয়াকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনি অবশ্য হেরে যান। দলের একাংশকে হারের জন্যই দায়ী করে সম্প্রতি তিনি দলও ছাড়েন। এই দু’বারই গৌতমবাবু জেলা সভাপতি হলেও পাশের জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন।

তৃণমূলের একাংশ নেতানেত্রী জানাচ্ছেন, দলের একাংশ সব সময়ই মনে করছেন অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জোরদার প্রার্থী দেওয়া উচিত। কিন্তু নানা কারণে দুই দফায় তা হয়ে ওঠেনি। তৃণমূল নেত্রী ও দল যদি আগামী ভোটে গৌতমবাবুকে শিলিগুড়িতে প্রার্থী করেন, তা হলে লড়াই টক্কর দেওয়ার মতোই হবে। তা ছাড়া বামফ্রন্ট এই কয়েক বছরে শিলিগুড়িতে অনেকটাই শক্তি হারিয়েছে। উল্টে বিজেপি সেখানে সামান্য কিছুটা হলেও সংগঠন বাড়িয়েছে। সেখানে গেরুয়া, বাম শিবিরকে টেক্কা দেওয়ার জন্য গৌতমবাবুর মতোই প্রার্থী দরকার।

এ দিন প্রায় এক ঘণ্টার ফেসবুক লাইভে গৌতমবাবুকে ৫১৭টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তরবঙ্গ জুড়ে রাস্তা, নিকাশি, হাসপাতালের চিকিৎসক, শিল্প সম্ভাবনা, গজলডোবার ভোরের আলোয় কর্ম সংস্থান, জেলাভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে নানা প্রশ্ন। তা ছাড়াও শিলিগুড়ি গেট, বিধান মার্কেট সংস্কার, সিটি অটো-টোটোর দৌরাত্ম্য নিয়ে গৌতমবাবু দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

শেষে সকলকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এই অনুষ্ঠান আমি নিয়মিত করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement