প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসক এবং নার্সদের একাংশ কোয়রান্টিনে যাওয়ায় চাপে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের চার জন চিকিৎসক এবং একজন ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান আক্রান্ত হওয়ায় তাঁদের সংস্পর্শে আসা অন্তত ১৩ জন চিকিৎসক এবং কমপক্ষে ১৬ জন নার্সকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। চিকিৎসকদের মধ্যে দু’জন পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের পড়ুয়া চিকিৎসক রয়েছেন। বাকিরা ইন্টার্ন বা হাউজ স্টাফ। বুধবার শিলিগুড়িতে আরও চার জনের শরীরে সংক্রমণ মেলে। সংক্রমণ ধরা পরে কালিম্পঙের দুই ব্যক্তির শরীরেও।
মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালের সুপারকে নিয়ে সেখানকার চার জন স্বাস্থ্যকর্মী মঙ্গলবার আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার ফের নতুন করে ওই হাসপাতালের দু’জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পরে। হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন আক্রান্তদের একজন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী, অপর জন ‘রিসেপসনিস্ট’। এই ঘটনায় কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে চিন্তা বেড়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হওয়ায় পরিষেবা চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘চিকিৎসক এবং নার্সদের মধ্যে অনেককে কোয়রান্টিনে পাঠাতে হওয়ায় সমস্যা রয়েছে। পরিষেবার দিকটি ঠিক রাখতে রোস্টারে কিছু রদবদল করতে হচ্ছে।’’ চিকিৎসক এবং নার্সদের দু’টি হোটেলে কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।
এ দিন শিলিগুড়ি শহরে আরও দু’জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক জন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সুকান্তনগরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের এক মহিলা। বাবার চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের পাঁচ সদস্য মঙ্গলবার সেখান থেকে ফেরেন। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুলাল দত্ত বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে পরিবারের লোকদের ঘুরতে দেখে বাসিন্দারা হইচই করে। তার পর তাঁদের লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। বাড়ির সামনের রাস্তা বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।’’ অপরজন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের দশরথপল্লি এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা। তাঁদের আবাসনের নিচে রাজস্থান থেকে ফেরা কয়েকজন হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন। বাবার নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তখন তাঁরও পরীক্ষা করানো হয়। বাবার সংক্রমণ না মিললেও ছেলের করোনা পজিটিভ মিলেছে।
অন্যদিকে কালিম্পঙে ফের দু’জনের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গে প্রথম যিনি মারা যান তিনি কালিম্পঙের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের পরিবারের ১০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন কালিম্পঙে থাকতেন। ২ এপ্রিলের পর থেকে জেলায় আর কারও শরীরে সংক্রমণ এতদিন দেখা দেয়নি। ফের নতুন করে জেলায় দুই মহিলার সংক্রমণের হদিশ মিলল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একজন আপার দাড়াগাঁওতে সামথার এলাকায় থাকেন। অপরজন নিম্বং গ্রাম পঞ্চায়েতের সুংগুরাদোবাং এলাকায় থাকেন। তিনি দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন। তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দু’জনকেই শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।