পাঁচশো টাকার গেরোয় পড়ে ‘প্রেমিকের’ সঙ্গে পালিয়েও বাড়ি ফিরতে বাধ্য হল দুই কিশোরী। বৃহস্পতিবার রাতে ভক্তিনগর থানার দুই মাইল লাগোয়া বোতল কোম্পানি এলাকার ঘটনা। যদিও ওই কিশোরীদের আরেক বান্ধবী ‘প্রেমিকের’ সঙ্গে থেকে গিয়েছে। প্রথমে এক কিশোরীর মা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। মামলা হয়। পরে অপহরণের মামলা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ দিন রাতে দুই কিশোরী শহরে ফিরে এসেছে। তাদের সঙ্গে থাকা এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। বাকি দুই জনেরও খোঁজ চলছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসিপি মৃণাল মজুমদার বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। মেয়ে তিনজনকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা যথাযথ ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
তবে প্রায় আড়াই মাস আগে ভক্তিনগর থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া জিম-পার্লারের কর্মী সঙ্গীতা কুণ্ডুর অর্ন্তধান রহস্যের এখনও কিনারা হয়নি। এই ঘটনার পরে সেই প্রশ্ন ফের সামনে চলে এসেছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, দু’টি ঘটনার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে কিশোরীদের দু’টি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। কিন্তু সঙ্গীতা কুণ্ডু মালিকের দেওয়া ফ্ল্যাটেই থাকতেন। সঙ্গীতার সঙ্গে জিম-পার্লারের মালিক পরিমল সরকারের সম্পর্ক নিয়েও পরিবারের তরফে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল। যদিও, পরিমলবাবুর পরিবারের তরফে সে অভিযোগ অস্বীকার করে সঙ্গীতা-র জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সে কারণেই পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, দুই ঘটনা পুরোদস্তুর ভিন্ন।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৯ নভেম্বর তিন কিশোরীকে দুই যুবক ফুঁসলে নিয়ে পালায় বলে অভিযোগ। ওই কিশোরীরা সকলেই সেবক রোডের দুই মাইল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা। দুই যুবক তাদের ট্রেনে করে আলিপুরদুয়ারে নিয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরির পর তাদের হাতের খুচরো টাকা শেষ হয়ে যায়। ৫০০ টাকার নোট ভাঙাতে না পেরে ইতিউতি ঘুরছিল। ইতিমধ্যে পুলিশ বিভিন্ন সূত্র মারফৎ কিশোরীদের খোঁজ শুরু করে। সকলের মোবাইল নম্বরের অবস্থান খতিয়ে দেখে তারা আলিপুরদুয়ারে রয়েছে বলে জানা যায়। শেষে দুই কিশোরী এবং এক যুবক শিলিগুড়ির পথে রওনা দিলে তদন্তকারী অফিসাররাও তাদের নাগাল পায়।
উদ্ধার হওয়া কিশোরীরা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই দুই যুবক তাদেরই এলাকায়। বেশ কিছুদিন ধরে তারা নিজেরা এসে ভাব জমিয়েছিল। এর পরে নানা কথা বলে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনায় সকলকে রাজি করায়। সেই সময় তিনজনকে ট্রেনে করে নিয়ে আলিপুরদুয়ারে চলে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে টাকা পয়সা শেষ হয়ে যায়। ৫০০ টাকার নোট থাকলেও তা খরচ করা যাচ্ছিল না। সেই সময় পুলিশও তাদের খোঁজ শুরু করেছিল। তখন এক যুবক দুই কিশোরীকে শিলিগুড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে। বাকি এক কিশোরী আরেক যুবকের সঙ্গে ওই এলাকায় কোথাও রয়েছে বলে ওই তিনজন পুলিশকে জানিয়েছে।