দুই ঘন্টার ব্যবধানে তিনটি অভিযোগ দায়ের। তিন জন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ধারা ৬টি। এর পর কী! পুরসভার বোর্ড মিটিঙে সিপিএম-তৃণমূলের গোলমালের জেরে তিনটি মামলার তদন্ত নিয়ে এমনই প্রশ্নে রবিবার দিনভর সরগরম থাকল শিলিগুড়ি থানা।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার মাথায় চোট, উচ্চ রক্তচাপের কথা জানিয়ে মেয়র হাসপাতালে ভর্তির পর শাসক দলের দুই কাউন্সিলরও বুকে ব্যথার কথা বলে হাসপাতালে ভর্তি হন। ততক্ষণে বামেরা হাসমিচকে রাস্তা অবরোধ করে। অবরোধ উঠতেই, ৭টা ২৫ মিনিটে পুলিশ রাস্তা আটকানোর প্রথম মামলাটি নিজেই করে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশবাবু-সহ ৫ জন নেতা ও ২০০ কর্মীর বিরুদ্ধে। মিনিট দশকের মধ্যে, সাড়ে ৭টা ৩৫ মিনিটে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ জমা পড়তেই মামলা দায়ের হয় মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, জয় চক্রবর্তী-সহ চার জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
অবশেষে, রাত সোয়া ৯টা বামেরা থানায় হাজির করে অভিযোগ করতেই মামলার মুখে পড়েন শাসক দলের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার-সহ পাঁচজন তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। যখন যখন অভিযোগ পড়েছে নিয়োগ হয়েছেন একজন করে তদন্তকারী অফিসার। যদিও রাস্তা অবরোধ বাদ দিলে বাকি দুটি মামলার ক্ষেত্রে একজন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগই করা যেতে পারত বলে একাংশ পুলিশ অফিসার মনে করছেন।
তাঁরা জানাচ্ছেন, ঘটনাস্থল একটাই, পুরসভা ভবন। সেখানে কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলা, কর্মী-অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত এগোতে হবে। দুই অফিসার আলাদা করে তদন্ত করলে ভিন্ন তথ্য যেমন সামনে আসতে পারে। তেমনই আবার, গোটা প্রক্রিয়াটি দেরিও হতে পারে। কমিশনারেটের তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, পুরোটাই রাজনৈতিক বিষয়, সঙ্গে জামিন অযোগ্য কোনও ধারা না থাকায় আপাতত গ্রেফতারির প্রশ্নই নেই। প্রাথমিক তদন্ত করে অভিযুক্তদের সমন পাঠিয়ে আদালতের মাধ্যমেই মামলাগুলির নিষ্পত্তির রাস্তায় হাঁটা হবে। কী প্রক্রিয়ায় এ সব হবে তা নিয়েই সকাল থেকে ব্যস্ত থেকেছেন অফিসারেরা। নতুন করে অবশ্য কোনও পক্ষের সঙ্গে কথা বলেনি তদন্তকারীরা। পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘ তদন্তে কী পাওয়া গেল, তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
সিপিএমের জীবেশবাবুর দাবি, শাসকদলের কথায় পুলিশ মামলা চালাবে। তিনি বলেন, ‘‘যারা মার খাবে তাদের নামেই মামলা হবে। এটাই রীতি হয়ে গিয়েছে।’’
আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। এতে আমাদের কিছু বলার নেই।’’