ছেলে বিজেপির টিকিটে জিতে তারপর তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, রাজ্য জুড়ে এই ধরনের দলবদল আকছার ঘটনা হয়ে দাঁড়ালেও এ ক্ষেত্রে মেনে নিতে পারেননি বাবা। তাই দলবদল করা ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন বাবা।
এমনই ঘটনা ঘটেছে ক্রান্তি এলাকার রাজাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ খুলনাই ক্যাম্প এলাকায়। টানটান লড়াই দিয়ে এই এলাকা থেকে স্থানীয় শিক্ষিত যুবক মনোদেব রায় বিজেপির হয়ে জিতেছিলেন। মনোদেবের এই লড়াইতে তাঁর বাবা যতীন রায় পুরোদমে তাঁর পাশে ছিলেন। কিন্তু এরপরেই তৃণমূলের অঞ্চল স্তরের নেতারা মনোদেবের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দেয়। আচমকাই চলতি সপ্তাহের সোমবারে বাড়িতে কিছু না বলেই বেরিয়ে যান মনোদেব। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে মঙ্গলবারই ক্রান্তি ফাঁড়িতে ছেলে নিখোঁজের অভিযোগও করেন যতীনবাবু। কিন্তু সেদিনই তৃণমূলের ক্রান্তি এলাকাদের নেতাদের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন মনোদেব। উন্নয়নের জোয়ার আনতেই এই সিদ্ধান্ত বলেও জানান মনোদেব।
এই খবর পেয়েই ছেলেকে আর কখনওই ঘরে তোলা যাবে না বলে জানিয়ে দেন রায় পরিবারের সকলে। বাড়িতে বাধা পেতে পারেন আঁচ করেই শুক্রবার বিকালে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন মনোদেব। কিন্তু এতেও শেষরক্ষা হয়নি। নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে তাঁরা ফিরবেন না বলেই এ দিন মনোদেবকে জানিয়ে দেওয়া হয়। যতীনবাবু বলেন, “পরিবারের মান সম্মান নষ্ট করে মনোদেব তৃণমূলের কাছে বশ্যতা স্বীকার করেছে, তাই বিজেপির পতাকা না নিয়ে এলে ওকে আমরা ফেরাব না।”
এ দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশও। কিন্তু তবুও সিদ্ধান্ত থেকে রায় পরিবার সরেননি। এরপরই মনোদেব ময়নাগুড়িগামী একটি বাসে উঠে এলাকা ছেড়ে চলে যান। তারপরে আর মনোদেবের সঙ্গে আর যোগাযোগও করা যায়নি। এলাকার বিজেপি নেতা জাকিরুল আলম, আবুল কালাম আজাদরা এ দিন রায় পরিবারের পাশে দাঁড়ান। বিশ্বাসঘাতকতার কাজ করেছে বলেই নিজের পরিবারও দলত্যাগ করা ছেলের পাশে দাঁড়ায়নি। এই ঘটনা নজির হিসাবে প্রচার করা হবে বলেও জানান তাঁরা। এদিকে পরিবারের ভিতরে ঢুকে কোন্দল বাঁধাবার কাজ করছে বলেই জানান তৃণমূলের ক্রান্তি ব্লক সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস। পারিবারিক সমস্যার বিষয়টি অভিযোগ আকারে আসলে পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানান মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী।