ডাইন অপবাদে মারধরে গুরুতর জখম প্রৌঢ়ার মৃত্যু হল৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে বৃন্দা চিকবরাইক নামের (৫৮) ওই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়৷ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতা বৃন্দা চিক বরাইক মাঝেরডাবরি চা বাগানের ফ্যাক্টরি লাইনে ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতনিকে নিয়ে থাকতেন৷ গত ২৮ জুলাই ওই এলাকারই বাসিন্দা সঞ্জিৎ চিকবরাইকের এগারো বছরের কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়৷ ওই নাবালিকা দীর্ঘদিন থেকেই নানা রোগে ভুগছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর৷ কিন্তু অভিযোগ, এই মৃত্যুর ঘটনার পরই তাদের সন্দেহের তির গিয়ে পড়ে প্রৌঢ়ার ওপর৷ আরও অভিযোগ, ওই দিন রাতেই সঞ্জিৎ একদল মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রৌঢ়ার বাড়িতে আক্রমণ করে৷ তার ছেলের সামনেই তারা তাকে কাঠের বাটাম, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করে৷ এমনকী ভোজালি দিয়েও তাঁকে আঘাত করা হয়৷ মারের চোটে ওই প্রৌঢ়ার কয়েকটি দাঁতও ভেঙে যায় বলে অভিযোগ৷
এই অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে গিয়ে উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান৷ সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পরেরদিন তাঁকে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়৷ কিন্তু প্রৌঢ়ার বাড়ির লোকেরা জানান, সেখান থেকে চিকিৎসকেরা প্রৌঢ়াকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও, তাঁদের আর্থিক সামর্থ না থাকায় ফের আলিপুরদুয়ারে এনে হাসপাতালে ভর্তি করান৷ সেখানেই এ দিন বিকেলে ওই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়৷
ঘটনার পরের দিনই পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল৷ আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, “ডাইন অপবাদে প্রহৃত হওয়া প্রৌঢ়ার এ দিন মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি৷ শুক্রবার তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে৷ ওই ঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা যোগ করা হবে৷”
প্রৌঢ়ার ছেলে বসন্ত চিকবরাইক বলেন, “ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মাত্র তিন জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ৷ বাকিরা সবাই পলাতক৷ আমরা সকল অভিযুক্তের কড়া শাস্তি চাই৷” জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে৷