প্রতীকী চিত্র।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনই কাউন্সিলর। মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভায় এমন কাউন্সিলর আছেন চার জোড়া। কেউ কংগ্রেস, কেউবা বা নির্দল থেকে জয়ী হলেও এখন চার যুগলই রয়েছেন শাসক শিবিরে। আর প্রত্যেকেই আবার হেভিওয়েট নেতানেত্রী। তবে এ বারের পুরনির্বাচনে এদের কাউন্সিলরদের একাংশের টিকিট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বেরই একাংশ সূত্রে খবর। তাঁদের দাবি, ‘‘ভোট কুশলী পিকের টিম শহর জুড়ে সমীক্ষা করার কাজ শুরু করেছে। আর তার পরই মিলবে টিকিট।’’ আর তাই কাউন্সিলর দম্পতিদের ভাগ্যে টিকিট জুটবে কিনা—তা ঠিক করবে ‘টিম পিকে’ই, জানাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব।
এখনও দিন ঘোষণা হয়নি, কিন্তু আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হতেই পুরনির্বাচনের প্রচার শুরু করেছে শাসক, বিরোধী—সব পক্ষই। একই সঙ্গে নিজেদের ওয়ার্ডে ভিত মজবুত করতে আসরে নেমেছেন কাউন্সিলরেরাও। যদিও এই দম্পতি কাউন্সিলরদের একাংশ নিজেদের গড়েই প্রচারে নামতে হোঁচট খাচ্ছেন বলে খবর। ইংরেজবাজার পুরসভার উপ-পুরপ্রধান দুলাল সরকার বলেন, ‘‘টিকিট মিলবে কিনা তা ঠিক করবে টিম পিকে। তাই টিকিটের বিষয়ে আমারও নিশ্চয়তা নেই।’’
এদের মধ্যে রয়েছেন খোদ ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান তথা বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী গায়ত্রী ঘোষ। ২০১৫ সালের পুরনির্বাচনে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নীহার এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন গায়ত্রী। তাঁরা দু’জনই বাম, কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। কংগ্রেসের টিকিটেই জয়ী হন নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী অঞ্জু দেবী। নরেন্দ্রনাথ ২২ এবং তাঁর স্ত্রী অঞ্জু ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। বিরোধী শিবিরে থাকলেও পরে এই চার জনই যোগ দেন তৃণমূলে।
আবার তৃণমূলের টিকিটেই ভোটে লড়াই করেছিলেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী কাকলি। ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ এবং কাকলি ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন। একই ভাবে ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দুলাল সরকার এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেতেন তাঁর স্ত্রী চৈতালী। চৈতালী এবং কাকলি দু’জনই দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। একই সঙ্গে রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচিত মুখও। চৈতালী তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রী পদেও রয়েছেন। তবে অঞ্জু এবং গায়ত্রী ভোট আঙিনায় পা দেন ২০১৫ সালে। এর মধ্যে আসন সংরক্ষণের জেরে সমস্যায় পড়েছেন নীহার এবং নরেন্দ্রনাথ। নরেন্দ্রনাথ ও তাঁর স্ত্রী—দু’জনের ওয়ার্ডই আসন সংরক্ষণের কোপে পড়েছে। যদিও তালিকা পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবু নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তাঁদের নেই বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর।
টিকিট পাওয়া নিয়ে একই কথা শোনা গেল দলের মালদহের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থী কে হবেন, সেটা রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করবেন। যদিও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমাদের নেতা, কাউন্সিলরেরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন।’’