ঐতিহ্যের শহরে দৃশ্যদূষণ রোখার দাবি

শহরের ব্যস্ততম রাস্তা থেকে জনবহুল মোড়েরও বিজ্ঞাপনে মুখ ঢাকার জোগাড়। কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর ঘোষণা নিয়ে প্রশাসনিক তৎপরতার মধ্যে শহরের এমন পরিস্থিতিতে দৃশ্যদূষণের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ১৩:৩০
Share:

বিজ্ঞাপন: হোর্ডিংয়ে মুখ ঢেকেছে সাগরদিঘির। নিজস্ব চিত্র

বিজ্ঞাপনের বিশাল হোর্ডিংয়ে ঢাকা পড়ছে রাজাদের আমলে তৈরি প্রাচীন ভবন। কোচবিহারের অন্যতম আকর্ষণ সাগরদিঘি চত্বরও পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছে।

Advertisement

শহরের ব্যস্ততম রাস্তা থেকে জনবহুল মোড়েরও বিজ্ঞাপনে মুখ ঢাকার জোগাড়। কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর ঘোষণা নিয়ে প্রশাসনিক তৎপরতার মধ্যে শহরের এমন পরিস্থিতিতে দৃশ্যদূষণের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। পুরসভা থেকে প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “বিষয়টি পুরসভার দেখার কথা। পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।”

এক সময়ের ‘রাজনগর’ কোচবিহারে এখনও দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা বেড়াতে আসেন। শতাব্দী প্রাচীন রাজবাড়ি, ভিক্টর প্যালেস, সার্কিট হাউস, এবিএন শীল কলেজ ও ছাত্রাবাস ভবন, জেনকিন্স স্কুল, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ হাইস্কুলে কবি নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত ছাত্রাবাস ঘুরে দেখেন তাঁরা। তাছাড়া দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্মৃতি বিজড়িত সাবিত্রী লজ, মদনমোহন বাড়ি, বৈরাগি দিঘি, ডাকঘর ভবন থেকে ল্যান্সডাউন হলের মত নিদর্শনও দেখতে যান তাঁরা। এমন ঐতিহ্যমণ্ডিত শহরকে হেরিটেজ ঘোষণার ব্যাপারে সওয়াল করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আগামী ১৪ জুলাই হেরিটেজ ঘোষণার ব্যাপারে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে আইআইটি খড়গপুরের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের এক প্রতিনিধি দলও কোচবিহারে আসবেন। তার আগেই দৃশ্যদূষণ নিয়ে সরব বাসিন্দারা।

Advertisement

বাসিন্দারা জানান, হেরিটেজ ঘোষণার প্রস্তুতি শুরু হলেও শহরে হোর্ডিং, ব্যানার-সহ নানাভাবে হওয়া দৃশ্যদূষণ বন্ধে উদ্যোগী হচ্ছে না প্রশাসন। যার জেরেই ইতিমধ্যে সার্কিট হাউস, মহারাজা ক্লাব, ব্রাহ্মমন্দির, এবিএন শীল কলেজ হোস্টেল, গুঞ্জবাড়ির ডাংগোরাই মন্দির চত্বরের একাংশ হোর্ডিংয়ে ঢাকা পড়েছে। রাজবাড়ি, ডাকঘর, সাগরদিঘি, বৈরাগীদিঘি, রাজমাতাদিঘির সামনেও মাঝেমধ্যে ব্যানার দেওয়া হয়। শহরের কেশব রোড থেকে সুনীতি রোড, কাছারি মোড় থেকে স্টেশন মোড়- প্রায় এক অবস্থা। অনুমতি না নিয়েও প্রচুর বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “খড়গপুর আইআইটির ওই প্রতিনিধি দল শহরে আসার আগে এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’ গবেষক নৃপেন পাল বলেন, “শহরের ঐতিহ্য, সৌন্দর্য রক্ষার জন্যও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা দরকার।”

কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ ওই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। ভূষণবাবু বলেন, “পুরসভা এলাকাকে দৃশ্যদূষণ মুক্ত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ব্যাপারে পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কোন এলাকায় কী হোর্ডিং রয়েছে তার তালিকা তৈরির জন্য বলেছি। কোনও প্রাচীন বাড়ি যাতে ঢাকা না পড়ে সেটাও দেখা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement