অর্ধ সমাপ্ত ‘সবার জন্য বাড়ি’। ডালখোলা শহরে। নিজস্ব চিত্র
‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের তালিকায় নাম দেখে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রত্না দেবী। নিজের বাড়ি হবে ওই ভরসায় ধার-দেনা করে ২৫ হাজার টাকা জোগাড় করে পুরসভার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পুরসভাও প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মিলে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছে। বাড়ি নির্মাণের কাজও শুরু করে দেন তাঁরা। কিন্তু পরের কিস্তির টাকা না আসায় মাঝপথেই থমকে গিয়েছে কাজ। ফলে, শীতের রাতে ত্রিপলের নীচেই থাকতে হচ্ছে রত্নাদেবীকে। রত্নাদেবীদের মতো ডালখোলা পুরসভার কয়েক’শো পরিবার হাল এমনই। তাঁদের অভিযোগ, সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, কারও দ্বিতীয়, কারও তৃতীয় কিস্তির টাকা এখনও মেলেনি। আটকে রয়েছে ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের কাজ।
ডালখোলা পুরসভার পুরপ্রধান স্বদেশ সরকার বলেন, ‘‘মাঝে কয়েক মাস প্রকল্পের টাকা আসেনি। ফের টাকা এসেছে। এখন তা ছাড়া হচ্ছে ধাপে ধাপে।’’
শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাগানপাড়ার বাসিন্দা কার্তিক সাহা বলেন, ‘‘আমার নাম বাড়ি পাওয়ার তালিকায় আছে। পুরসভা ও নিজেদের জমা করা প্রথম কিস্তির ৫৫ হাজার টাকায় ঘর তৈরি শুরুও করেছি। কিন্তু বাকি টাকা না আসায় ছাদ দিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে এক বছর ধরে ত্রিপলের নীচেই রাত কাটাতে হচ্ছে।’’
একই অভিযোগ তালিকায় নাম থাকা কমলা বিশ্বাস, সুনীল রাজভরদের। তাঁদের দাবি, কাঁচা বাড়ি ভেঙে পাকা বাড়ি তৈরি করার জন্য টাকা দেওয়ার কথা পুরসভার। কিন্তু স্থানীয় কাউন্সিলর, পুরপ্রধানকে বার বার জানানো হলেও কোনও প্রতিকার মেলেনি। ডালখোলা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পে হাজার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাড়ি পিছু খরচ ধরা হয়েছে তিন লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। সবাই প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়ে গিয়েছেন। পরের কিস্তির টাকা পাওয়ার জন্য, নিয়ম মতো বাড়ির একটা ভাগ নির্মাণের কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু টাকা আসতে দেরি হওয়ায়, বাকি কাজ আটকে রয়েছে।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর কৈলাস সাহা বলেন, ‘‘পুরপ্রধানকে একাধিক বার ব্যাপারটা জানিয়েছি। মাঝপথে কাজ থমকে যাওয়ায়, উপভোক্তারা দুর্ভোগেরমধ্যে পড়েছেন।’’