কৌশিক ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনায় আক্রান্ত সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মৃত্যু হল। সোমবার সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ বালুরঘাট কোভিড হাসপাতালে মারা যান চিকিৎসক কৌশিক ঘোষ (৫৯)। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসারের (জিডিএম) দায়িত্বে ছিলেন। করোনা পজ়িটিভ হয়ে তাঁর স্ত্রীও কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত চিকিৎসকের করোনা টিকার দু’টি ডোজ়ই নেওয়া ছিল। গত সপ্তাহেও তিনি ডিউটি করেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানান, ওই চিকিৎসক ৪ দিন আগে পজ়িটিভ হয়ে বাড়িতেই ছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হলে তাঁকে বালুরঘাট কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে চলায় ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। ওই দিন সন্ধে ৭টা নাগাদ তিনি মারা যান।
কয়েক মাস আগে আলিপুরদুয়ারে এক স্বাস্থ্যকর্তা দু’টি ডোজ় নেওয়ার পরেও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এ বারে কৌশিকের মৃত্যুর পরেও একই ধরনের উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে জেলায়। মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যুর খবর আসতেই জেলার সমস্ত চিকিৎসক রোগী দেখা বন্ধ রেখে শোক পালন করেন। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁদের অনেকেই দাবি করেন, সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। প্রশাসনকেও দেখতে হবে যাতে, মানুষ মাস্ক পরেন এবং করোনার সব বিধি মেনে চলেন। না হলে সব দিক থেকেই সমস্যা বাড়বে।
বীরভূমের বোলপুরের বাসিন্দা কৌশিক কাজের সূত্রে বালুরঘাটে থাকতেন। এখানেই তাঁর শ্বশুরবাড়িও। প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা ওই চিকিৎসক দুটি ডোজ় নেওয়ার পরেও আচমকা উপসর্গ বেড়ে মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসন মহলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মাস সাতেক আগে, এপ্রিলে এ জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ অলোককুমার পাল (৫৬) করোনায় মারা যান। এর পর বালুরঘাট হাসপাতালের দন্ত বিশেষজ্ঞ রামেন্দু ঘোষের (৫৮) করোনায় মৃত্যু হয়। অথচ মৃত ওই তিন চিকিৎসক বাইরে কোথাও ঘুরতেও যাননি। কর্মরত অবস্থায় তাঁরা সংক্রমিত হন। পাশাপাশি টিকার সম্পূর্ণ ডোজ় নেওয়ার পরেও মৃ্ত্যুর ঘটনায় জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদেরও কপালে ভাঁজ পড়েছে। উদ্বিগ্ন এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘বালুরঘাটে বাড়তে থাকা সংক্রমণ মোকাবিলায় সতর্কতাই অন্যতম প্রধান উপায়।’’