যে যেখানে দাঁড়িয়ে: বুধবার দার্জিলিং ক্যাপিটাল হলের সামনে হামরো পার্টি এবং জনমুক্তি মোর্চা মিলিয়ে ১৫ জন কাউন্সিলর।নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিং পুরসভায় অনাস্থা নিয়ে হামরো পার্টির আর্জি খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। অনাস্থায় অপসারিত হামরো পার্টির চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেলের মামলার শুনানি হয়েছিল গত মঙ্গলবার। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ আর্জিটি খারিজ করে দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, দার্জিলিং পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব যথাযথ ভাবেই আনা হয়েছিল।
হাই কোর্টের রায়ের পরে পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রীতেশ দলের সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডের সঙ্গে কথা বলে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের বিষয়টি জানান। সেই সঙ্গে, ১৬ জানুয়ারি পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হামরো পার্টি যোগ দেবে বলেও জানান। এ দিন আদালতের রায়ের পরে রীতেশ বলেন, ‘‘আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব। তার আগে, নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনে যোগ দেব।’’
এ দিন বিকেলে দার্জিলিং ক্যাপিটাল হলের সামনে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও মঞ্চ’-এর অনুষ্ঠানে হামরো পার্টির ১২ জন এবং তিন জন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কাউন্সিলর হাজির হন। সকলকে ফুলের তোড়া দিয়ে আগামী লড়াইয়ে এক জোট হয়ে থাকার জন্য সংবর্ধনা জানানো হয়।
এর আগে, হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের একক বেঞ্চও রীতেশ পোর্টেলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। যে যে কারণে একক বেঞ্চ মামলাটি খারিজ করেছিল, সেগুলিকে মান্যতা দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চও। এ দিনের নির্দেশের পরে, দার্জিলিং পুরসভায় নতুন করে চেয়ারম্যান নির্বাচনে আর কোনও আইনি বাধা থাকল না বলে দাবি। সার্কিট বেঞ্চের সরকারি আইনজীবী বিক্রমাদিত্য ঘোষ বলেন, “যে প্রক্রিয়ায় অনাস্থা আনা হয়েছিল, তাতে আইনি কোনও ত্রুটি নেই। অনাস্থা সভার নোটিস যথাযথ বলে বেঞ্চ জানিয়েছে। এতে অনাস্থা সভা নিয়েও কোনও সমস্যা বা সংশয় থাকল না।”
হামরো পার্টির অপসারিত পুর চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে দাবি করেছিলেন, যে নোটিসের ভিত্তিতে অনাস্থা সভা ডাকা হয়েছিল তাতে মাত্র তিন জন কাউন্সিলরের সই রয়েছে। কিন্তু পুর আইন অনুযায়ী, অনাস্থার নোটিসে এক-তৃতীয়াংশ কাউন্সিলরের সই প্রয়োজন হয় বলে দাবি করা হয়। সে দাবিকে আদালত মান্যতা দেয়নি। মঙ্গলবার শুনানির সময়ে রীতেশ এবং ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াংজি শেরপা দু’জনেই জলপাইগুড়িতে আদালত চত্বরে ছিলেন। এ দিন অবশ্য তাঁরা কেউ আসেননি। রীতেশের আইনজীবী কুণালজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “আদালত আবেদন খারিজ করেছে।’’ বিপক্ষে আদালতে ছিলেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মহাসচিব তথা আইনজীবী অমর লামা। তিনি বলেছেন, ‘‘সমস্ত কিছুই রাজ্যের পুর আইন মেনে হয়েছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেল।’’
দার্জিলিং পুরসভায় ৩২টি আসন। হামরো পার্টি ১৮টি আসন জিতে বোর্ড গঠন করেছিল। ছ’জন সম্প্রতি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিতেই হামরো পার্টির বোর্ড ক্ষমতা হারায়।