বুথের দায়িত্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফাইল চিত্র।
ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গোলমাল হলে লাঠি চালানো বা আরও কঠোর কোনও পদক্ষেপের আগে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জেলা প্রশাসনকে ‘জানাতে’ হবে। এ দিন জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক ডেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর শীর্ষ অফিসারদের এমনিই জানিয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার-সহ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা যেন বুথের দরজার সামনে থাকেন, বুথের ভিতরে না ঢোকেন। বুথের একশো মিটারের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব নিতে হবে জানিয়েছে প্রশাসন। তবে জেলায় যে পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে, তাতে সব ক’টি স্পর্শকাতর বুথেও বাহিনী দেওয়া যাবে না বলে অভিযোগ।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কোনও কড়া পদক্ষেপ করার আগে, আমাদের জানাতে বলা হয়েছে। আমার ফোন নম্বরও দিয়েছি বাহিনীকে। ভোট কেন্দ্রেও প্রশাসনের আধিকারিকদের নম্বর থাকবে।” বিরোধীদেরঅভিযোগ, জেলা প্রশাসন বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।
জলপাইগুড়ি সদর থেকে রাজগঞ্জ, মালবাজার সব ব্লকেই এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের না দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ভোটকর্মীরা। রাজগঞ্জে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে বিক্ষোভও হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরঞ্জাম বিলির কয়েক’টি কেন্দ্র থেকে ভোটকর্মীদের আশ্বাস দেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুরের পরে পরিস্থিতি এমন হয় যে দেখা যায়, সব ‘স্পর্শকাতর’ বুথেও বাহিনী দেওয়া যাবে না। জলপাইগুড়ি জেলায় স্পর্শকাতর বুথ ১৮২টি। জেলায় বাহিনী এসে পৌঁছেছে ১১ কোম্পানি। আরও ১০ কোম্পানি বাহিনী এসে পৌঁছনোর কথা। প্রশাসন সূত্রের খবর, সে বাহিনী অসমের শিলচর থেকে রওনা দিয়েছে। তাদের এসে পৌঁছতে আজ ভোটের দিন দুপুর গড়িয়ে যেতে পারে। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে বলেছেন, “কোন বুথে বাহিনী দেওয়া হবে, তার পরিকল্পনা করা আছে। যখনই বাহিনী এসে পৌঁছবে, বুথে পাঠানো হবে।”
‘স্পর্শকাতর’ বুথের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, একটি কেন্দ্রে এক বা দু’টি বুথ থাকলে, সেখানে ‘আধ সেকশন’ বাহিনী থাকবে অর্থাৎ, চার জন জওয়ান থাকবেন। তিন এবং চারটি বুথের ভোট কেন্দ্রে ‘এক সেকশন’ অর্থাৎ, আট জন জওয়ান থাকবেন। পাঁচ এবং ছয় বুথের কেন্দ্রে ১২ জন জওয়ান থাকবেন। এ ছাড়া, স্ট্রংরুমে এক কোম্পানি করে বাহিনী থাকবে। এই রূপরেখা মেনে জলপাইগুড়ি জেলার সব ‘স্পর্শকাতর’ কেন্দ্রে বাহিনী রাখা সম্ভব নয়, জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।