তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নির্বাচিত হয়ে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গেলেন খাতায়কলমে এখনও সিপিএমের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস।
গাজলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসকে ব্লক সভানেত্রী করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। গত, বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁর নাম ঘোষণা করেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। দলে এই নয়া দায়িত্ব পেয়ে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন দীপালি। তিনি বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের প্রতীকে জয়ী হয়েছিলেন। পরে দল বদলে তৃণমূলের শিবিরে যোগ দেন। যদিও বিধানসভাতে সিপিএমেরই বিধায়ক রয়েছেন বলে দাবি করতেন।
এখন তৃণমূল তাঁকে ব্লক সভাপতি করায় ফের স্পিকারের দ্বারস্থ হয়ে তাঁর সদস্যপদ খারিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিরোধীদের এই অভিযোগকে অবশ্য আমল দিতে নারাজ দীপালিদেবী। তিনি বলেন,“বিধায়ক হিসেবে আমি এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। আর দলের দায়িত্ব পাওয়ায় সকলকে নিয়ে কাজ করব।’’ একই সঙ্গে সদস্যপদ নিয়ে বিধানসভার স্পিকারকে যা বলার বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেসের জোটপ্রার্থী হয়ে গাজলের তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক সুশীল রায়কে হারিয়েছিলেন দীপালি। বিধায়ক হওয়ার পরেই তৃণমূল শিবিরে নাম লেখান। ২১ শে জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন দীপালি। তারপর থেকে শাসক দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গিয়েছে। এই নিয়ে দল বিরোধী আইনে তাঁর সদস্যপদ খারিজের জন্যও দাবি করেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধানসভার স্পিকারের কাছে গিয়েও অভিযোগ জানানো হয়। তবে দীপালি স্পিকারের কাছে নিজের অবস্থান নিয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি। তিনি সিপিএমের বিধায়ক হিসেবেই বিধানসভায় যোগ দিতেন। তাই বিরোধীদের ওঠা অভিযোগ কার্যকর হয়নি।
তবে তাঁকে তৃণমূল দলীয় পদ দিতেই ফের তাঁর বিরুদ্ধে বিধানসভায় সদস্যপদ খারিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সিপিএমের বিধায়ক অম্বর মিত্র বলেন, “দীপালি তৃণমূলে গেলেও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করছিলেন না। এ বার আমরা উপযুক্ত প্রমাণপত্র পেয়ে গিয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বকে তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় তথ্য প্রমাণ পাঠানো হয়েছে।”
দিপালীকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূরও। তিনি বলেন, “দীপালীদেবী দলবদল করে গাজোলের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। যার জবাব তাঁকে মানুষই দেবেন।” এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধীরা বিধানসভায় স্পিকারের দ্বারস্থ হওয়ার কথা কানে আসতেই বিড়াম্বনায় পড়েছেন দীপালি।
তিনি ইতিমধ্যে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও শুরু করে দিয়েছেন। যদিও প্রকাশ্যে এ নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ তিনি।