প্রতীকী ছবি।
২০১৭ সালে তৃণমূল আমাকে রায়গঞ্জ পুরসভা নির্বাচনের প্রচারের সভা করতে দেয়নি। সেইসময় আমি মোটরবাইক নিয়ে রায়গঞ্জের রাস্তায় প্রচার করেছি। তৃণমূল মারপিট, লুটপাট করে পুরসভা দখল করেছে। রবিবার সকালে রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটীতে চা চক্রের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এমনই অভিযোগ তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, ওই নির্বাচনে তৃণমূল মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। তারপর গত বছর নির্বাচনে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের মানুষ বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীকে জিতিয়ে তা পুষিয়ে দিয়েছেন।
এরপরেই এ দিন দিলীপ হুমকির সুরে বলেন, “তৃণমূল যদি মনে করে পুলিশকে ঢোড়া সাপ বানিয়ে রেখে দুষ্কৃতী, গুন্ডা, সমাজবিরোধীদের নিয়ে রাজনীতি করে রায়গঞ্জ-সহ রাজ্যের সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হবে, তা হলে ভুল ভাবছে।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘মারপিট, সন্ত্রাস করে নির্বাচনে জেতা সহজ হলে ইংরেজরা যেমন দেশছাড়া হত না, তেমনই সিপিএমও রাজ্যের ক্ষমতা থেকে সরত না।” দিলীপের হুঁশিয়ারি, “রায়গঞ্জে বলে যাচ্ছি, বিজেপির দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালে ডিসেম্বরের পর থেকে মার শুরু হবে। কারণ, রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। স্বৈরতন্ত্র চলছে। এই সরকারের ডেথ সার্টিফিকেট লেখা হয়ে গিয়েছে।”
এ দিন দিলীপ আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে বাংলার অবস্থা ইরাক ও কাশ্মীরের চেয়েও খারাপ। তৃণমূলের অনেক বিধায়ক ও নেতা বিজেপিতে আসার জন্য ওয়েটিং লিস্টে আছেন। সৌগত রায় মাস্টার মশাই মানুষ। উনি নিজেই বলেছেন, তৃণমূলের জাহাজ ডুবতে চলেছে। ইঁদুররা পালাচ্ছে। এ বার গরু, মোষেরাও পালাবে।’’ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পাগল উকিলকে সামনে রেখে তৃণমূল রাজনীতি করছে। উনি ক্ষ্যাপা আইনজীবী। দলের সব মামলা লড়ে হেরেছেন।’’ দিলীপের সংযোজন, ‘‘এখন তো আবার ভাইপো শব্দটি বললে দিদিমণি ক্ষেপে যান। দিদিমণির লোকেরা রাজ্যজুড়ে বিজেপির নেতা ও কর্মীদের খুন করে চলেছে আর সহানুভূতি পাওয়ার জন্য দিদিমণি বলছেন, তাঁকে নাকি খুন করার চক্রান্ত চলছে।’’
উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাসের পাল্টা বক্তব্য, “দিলীপবাবু নিজেই সমাজবিরোধীদের মতো হুমকির সুরে কথা বলে বিজেপির অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতন্ত্রিক রাজনীতির পরিচয় দিয়েছেন। উন্নয়নের স্বার্থে রায়গঞ্জ শহরের বাসিন্দারা ২০১৭ সালে তৃণমূলকে রায়গঞ্জ পুরসভা উপহার দিয়েছে।” সন্দীপের পাল্টা হুমকি, “দিলীপবাবুদের জানিয়ে রাখতে চাই, তৃণমূল হাতে চুড়ি পড়ে বসে নেই। বিজেপি মার দিলে তৃণমূলও পাল্টা মার দেওয়ার জন্য তৈরি। জেলায় উন্নয়ন ও সম্প্রীতির ধারা ধরে রাখতে মানুষ তৃণমূলের পাশে রয়েছে।”
রায়গঞ্জের সিপিএমের সাংসদ মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, “আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের মানুষ লুটেরা তৃণমূলদের দোকান বন্ধ করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে। ওই নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক বিজেপিকেও রাজ্যের মানুষ প্রত্যাখান করবে।”
এ দিনের চা চক্র কর্মসূচিতে দিলীপ ছাড়াও হাজির ছিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ীর মতো নেতৃত্ব।