ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলায় সপ্তাহে চারদিন করে নিয়মিত ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু হয়েছে। তবে মহড়ার সময় ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের খরচ এখনও মেলেনি বলে ডিলারদের অভিযোগ। ফলে, ওই প্রকল্প চালু রাখার খরচ কবে মিলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ডিলাররা। অন্যদিকে, বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অনেক রেশন দোকানের মাধ্যমে ওই প্রকল্পে বাসিন্দাদের রেশনের সামগ্রী দেওয়া তো দূরের কথা, জেলার কোথায়, কবে বাসিন্দাদের রেশনের সামগ্রী দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে চার্টও লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ। সরকারি নির্দেশ মেনে প্রতিটি রেশন দোকানে ওই প্রকল্পে অতিরিক্ত দু’জন করে কর্মী নিয়োগ করা হলে, লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন মালদহের রেশন ডিলারদের একাংশ। এরই মাঝে এ দিন নিম্নমানের খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে।
উত্তর দিনাজপুরে ৫৪০টি রেশন দোকান রয়েছে। তার মধ্যে এ দিন পর্যন্ত ২৫ শতাংশ ডিলার ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু করেছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। জেলা রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কমল সরকার বলেন, ‘‘১৬ অগস্ট থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে পরীক্ষামূলক ভাবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু ছিল। কিন্তু ওই প্রকল্পে ডিলাররা এখনও পর্যন্ত কুইন্টাল পিছু রেশনের সামগ্রী বাবদ ১৫০ টাকা করে খরচ করেও তা পাননি। বর্তমানে ওই প্রকল্প মাসে ৮ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৬ দিন করা হয়েছে। ফলে ওই প্রকল্পের খরচ বাড়লেও তা কবে মিলবে, তা নিয়ে রেশন ডিলাররা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।’’
উত্তর দিনাজপুর জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, রাজ্য সরকার শীঘ্রই রেশন ডিলারদের সমস্ত বকেয়া আর্থিক পাওনা মিটিয়ে দেবে।
দক্ষিণ দিনাজপুরে ৩০৩টি রেশন দোকানের মধ্যে এ দিন সব জায়গায় ওই প্রকল্প চালু হয়নি বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, কবে কোন এলাকায় রেশন বিলি হচ্ছে তার চার্টও সব জায়গায় এখনও টাঙানো হয়নি বলে রেশন ডিলারদের সংগঠন সূত্রে খবর। ফলে, জেলার বহু বাসিন্দা এখনও পর্যন্ত ওই প্রকল্পে রেশনের খাদ্যসামগ্রী পাননি বলে অভিযোগ। বালুরঘাট ব্লক এমআর ডিলার সংগঠনের নেতা শিবেন মাহাতো বলেন, ‘‘সব জায়গায় চার্ট শীঘ্রই টাঙিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের দাবি, সব বাসিন্দারাই দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সুবিধে পাবেন।
অন্যদিকে, ওই প্রকল্পের দ্বিতীয় দিনে মালদহেও ওই প্রকল্পে কোথাও চার্ট টাঙানো হয়নি বলে খবর। কোথাও আবার ওই প্রকল্প চালু না হওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
এ দিকে, নিম্মমানের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার, হরিশ্চন্দ্রপুরের বারদুয়ারি এলাকায় গোপাল আগরওয়াল নামে এক রেশন ডিলারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকেরা। অভিযোগ, তিনি বাসিন্দাদের পোকা ধরা চাল ও আটা নিতে বাধ্য করেন। ঘটনার প্রতিবাদ করায় তিনি মহিলাদেরও হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোপাল। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি।
(তথ্য: গৌর আচার্য, শান্তশ্রী মজুমদার, অভিজিৎ সাহা ও বাপি মজুমদার।)