এক মহিলাকে খুন করে দুটি চোখ নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকালে মালদহ জেলার গাজল থানার মাতল এলাকা থেকে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুনের কারণ নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতের নাম লক্ষ্মী মুদি (৪০)। তাঁর বাড়ি গাজলের ষোলাকান্দর গ্রামে। তাঁর স্বামী বাহাদুর মুদি ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে। মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার দুরে মাতল গ্রামে বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন লক্ষ্মীদেবী। বোন ব্রজর কাছে ৫০০ টাকা পেতেন তিনি। গত চার মাস আগে সেই টাকা ধার নিয়েছিলেন ব্রজ। তবে বকেয়া টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। গত শনিবারও টাকা চাইতে বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন লক্ষ্মীদেবী। পরের দিন টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হলে বাড়ি ফেরেন। কথা মতো রবিবারও টাকা তাগাদার জন্য সকাল সাতটা নাগাদ বের হয়। আর বাড়ি ফিরে আসেননি। তাতে পরিবারের লোকেরা ভাবেন আত্মীয়ের বাড়িতেই থেকে গিয়েছেন।
লক্ষ্মীদেবী ও তাঁর স্বামী বাহাদুরের চার ছেলেমেয়ে। বড়ো ছেলে চন্দন কেরলে শ্রমিকের কাজ করেন। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে মাস সাতেক আগে। এক ছেলে কুন্দন নবম এবং মেয়ে ভাগ্যশ্রী ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার বোন ব্রজর স্বামী রাবণ বছর দুয়েক আগেই মারা গিয়েছেন। দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে একাই থাকেন ব্রজ। এ দিন থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে চোখ দুটি নষ্ট করা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক বিবাদের জেরেই খুন হয়েছেন লক্ষ্মীদেবী।
এ দিন সকালে গাজল-চাঁচল ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে মাতল এলাকার একটি কালভার্টের পাশে বাসিন্দারা দেহটি দেখতে পান। দেহটির দুই চোখেই আঘাত রয়েছে। তার মধ্যে বাম চোখের আঘাত গুরুতর। তাঁরা পুলিশে খবর দিলেও পুলিশ দেরিতে গিয়েছে বলে অভিযোগ করে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। মৃতার পরিবার গাজল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে অভিযোগে কারও নাম নেই। নিহতের স্বামী বাহাদুরবাবু বলেন, ‘‘আমরা চাই পুলিশ অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করুক।’’