অনিয়মে অভিযুক্ত গৌরহরিকে বদলি

স্কুল দফতর সূত্রেই খবর, পরিদর্শক দফতরের ‘ইউডি ক্লার্ক’ পদ থেকে তাঁকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা গ্রন্থাগারিকের দফতরের কর্মী হিসাবে সেখানে বদলি করা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০০
Share:

দাড়িভিট কাণ্ডের জেরে উঠে এসেছে উত্তর দিনাজপুর জেলায় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়মের নজির। মাধ্যমিকস্তরের কয়েকশো শিক্ষকের শূন্যপদে পাঠানো হয় উচ্চ মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষকদের। এই অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে উত্তর দিনাজপুর জেলার তৎকালীন স্কুল পরিদর্শক নারায়ণচন্দ্র সরকার এবং দফতরের কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে। তাঁদের অন্যতম স্কুল পরিদর্শকের দফতরের কর্মী গৌরহরি দাসকে শেয পর্যন্ত অন্যত্র বদলি করল স্কুল শিক্ষা দফতর।

Advertisement

স্কুল দফতর সূত্রেই খবর, পরিদর্শক দফতরের ‘ইউডি ক্লার্ক’ পদ থেকে তাঁকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা গ্রন্থাগারিকের দফতরের কর্মী হিসাবে সেখানে বদলি করা হল। বৃহস্পতিবার এই বদলির নির্দেশ দেওয়া হয় শিক্ষা অধিকর্তার দফতর থেকে।

গৌরহরির বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে এমন পাসওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছিল, যা একমাত্র স্কুল পরিদর্শকের কাছেই থাকার কথা। তা ছাড়া নিজের ব্যক্তিগত ইমেলকে অফিসের মেল হিসাবে নথিভুক্ত করিয়ে রাখেন। তাতে রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে যে সমস্ত মেল আসত তা তার ব্যক্তিগত মেলে যেত। তাঁর নামে জেলাশাসক এবং শিক্ষা দফতরের কর্তাদের কাছে অভিযোগ হয়েছিল। চাকরি জীবনের তিন দশক ধরে তিনি কী করে একই অফিসে রয়েছেন তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মৌরসিপাট্টা চালাতেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন শিক্ষকদের অনেকেই। তাঁকে বদলির নির্দেশ স্কুল পরিদর্শকের দফতরের ঘুঘুর বাসা ভাঙার ক্ষেত্রে জেলাপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই অনেকে মনে করছেন।

Advertisement

গৌরহরিবাবু বলেন, ‘‘মাঝে কয়েক বছর অন্যত্র কাজ করলেও দীর্ঘ সময় এই অফিসেই ছিলাম। তাই রুটিন বদলি বলেই জেনেছি।’’

স্কুল পরিদর্শকের দফতরের দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনে নামে প্রধান শিক্ষকদের ফোরাম এবং বিভিন্ন সংগঠন। দাড়িভিট কাণ্ডের জেরে স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলকে সাসপেন্ড করার বিরুদ্ধে তাঁরা সরব হন। কেননা সমস্যাগুলো মেটানোর চেষ্টার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। দাড়িভিট কাণ্ডের পরে উঠে আসা অনিয়মের তদন্তে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথবাবুর সাসপেনশন প্রত্যাহার করে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ পদে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয় শিক্ষা দফতরের অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর পদে।

উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রধান শিক্ষকদের ফোরামের সম্পাদক অজয় রায়, কোষাধ্যক্ষ সৌমিত্র রায়রা জানান, ডিআই অফিসের গাফিলতি ছিল বলেই শিক্ষক নিয়োগে এই জেলায় এত বড় অনিয়ম ঘটেছে। অভিযুক্তদের একাংশকে সরিয়ে যে পদক্ষেপ করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এমন দুর্নীতি রুখতে তা কতটা কার্যকর হবে সেটাই দেখার। খোলনলচে বদলাতে প্রশাসনিক স্তরের এ ধরন বদলির সিদ্ধান্তে তাঁরা আশাবাদী বলে জানিয়েছেন। গৌরহরিবাবুর জায়গায় বদলি করা হয়েছে জেলা গ্রন্থাগারিকের দফতরের ইউডি কর্মী সঞ্জয় কর্মকারকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement