দাড়িভিট কাণ্ডে সাসপেন্ড হওয়া দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিআই (মাধ্যমিক) নারায়ণচন্দ্র সরকারকে ক্লিনচিট দিয়ে সাসপেনশন তুলে নিল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি তাঁকে স্কুল এডুকেশন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদ দেওয়া হয়েছে। নারায়ণবাবুর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময় ছিল মাত্র এক মাস। ৩১ ডিসেম্বর তিনি অবসর নিতেন। তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ২ নভেম্বর। অবসরের তিন দিন আগে শাস্তিমুক্ত হয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি। শুক্রবার নারায়ণবাবু ওই চিঠি পান। তিনি কলকাতাতেই ছিলেন। শুক্রবারই তিনি বিকাশ ভবনে গিয়ে কাজে যোগ দেন।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল। গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ নামে দুই ছাত্রের৷ গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। মৃতরা ওই স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। ঘটনার প্রতিবাদ গোটা রাজ্য জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। ঘটনায় বিভিন্ন শহরে শুরু হয় প্রতিবাদ মিছিল। এই ঘটনায় দাড়িভিটের প্রধান শিক্ষককে রাজ্য শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে সাসপেন্ড করা হয়।
উত্তর দিনাজপুরের ডিআই রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলের পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিআই (মাধ্যমিক) নারায়ণচন্দ্র সরকারকেও সাসপেন্ড করা হয়। ওই দিন বিকেলে শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে তিনি সাসপেনশনের চিঠি পান। সেখানে উল্লেখ রয়েছে দাড়িভিট কাণ্ডের জন্য তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এদিকে আগামী ডিসেম্বর মাসে নারায়ণ চন্দ্র সরকার চাকরি থেকে অবসর নেবেন। তার আগে এমন নির্দেশে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। উত্তর দিনাজপুরে ডিআই পদে থাকার সময় নারায়ণবাবুর বিরুদ্ধে রোস্টার না মেনে বহু স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ, দাড়িভিট স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তৈরি সমস্যার জন্য তাঁর ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ পেয়ে রাজ্যের শিক্ষা বিভাগ থেকে ওই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছিল।
এরপর দাড়িভিট প্রসঙ্গে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। নারায়ণবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রমাণপত্র পেশ করেন শিক্ষা দফতরে। এদিন নারায়ণবাবু জানান, ওই সব প্রমাণপত্রের নথির ভিত্তিতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। অবশেষে শুক্রবার পদ পরিবর্তনের চিঠি হাতে পান তিনি।
কলকাতা থেকে ফোনে তিনি আরও জানান, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে তিনি ডিআই হিসেবে উত্তর দিনাজপুর জেলায় নিযুক্ত হন। এরপর গত এক বছর ৩ মাস ধরে তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরে ডিআই হিসেবে কাজ করছিলেন।