চলছেই: ডালখোলা বাইপাসের রেলওয়ে উড়ালপুল কাজ। নিজস্ব চিত্র
কাজ এখনও বাকি। তাই মার্চ মাসে ডালখোলা বাইপাস খোলা সম্ভব হবে না, জানালেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা। কবে তা চালু করা যাবে, তা নিয়ে তাঁরা অন্ধকারে। রবিবার রেলের একটি প্রতিনিধিদল এসে উড়ালপুলের স্তম্ভগুলি খতিয়ে দেখে গিয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলটি ছাড়পত্র দেওয়ার পরেই রেল লাইনের উপর দিয়ে উড়ালপুলের কাজ শুরু হতে পারে।
কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি গিয়েছে যে জাতীড় সড়ক, তার অন্যতম জট ডালখোলায়। এখানে জাতীয় সড়কের উপরে দিয়ে রেল লাইন গিয়েছে। সেই লাইন দিয়ে রোজ ১২০টি ট্রেন যাতায়াত করে। স্থানীয় লোকজনের দাবি, প্রতি পনেরো মিনিটে একবার লেভেল ক্রশিংয়ের দরজা বন্ধ হয়। তাতে যানজট হয়। তার উপরে শহরের রাস্তা সংকীর্ণ। তার ফলে দুর্ভোগ বাড়ে। জট সহজে খুলতে চায় না। শিলিগুড়ি তো বটেই, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি থেকে যে বাস বা গাড়িগুলি কলকাতার দিকে যায়, সকলকেই এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়। যানজটের ফলে অনেককেই দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। দাঁড়াতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
সেই জট এড়াতেই বাইপাস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০০৬ সালে। সাড়ে ৫ কিমি দীর্ঘ সেই বাইপাসের জমি অধিগ্রহণে প্রথমে সমস্যা হয়। তার ফলে কাজে গতি আসছিল না। কখনও জমির ন্যায্য দাম নিয়ে আন্দোলন, কখনও অর্থাভাব। শেষে জমি মেলে। ২০১৬ সালে কাজও শুরু হয়। দু’বার মেয়াদ বাড়িয়েও তা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এই মার্চেও কাজ শেষ হবে না। রেল ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত তিনটি কারণে কাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে। এক, রেলের উড়ালপুলের পুরনো নকশায় রেল আপত্তি জানায়। নতুন করে ফের নকশা জমা দিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। দুই, বুড়ি মহানন্দার নকশাও বদল করতে হয়। ফলে কাজের সময় বাড়তে থাকে। সর্বোপরি, গত বর্ষায় বুড়ি মহানন্দার জল উপচে বাইপাস এলাকা জলের তলায় চলে যায়। রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানাচ্ছেন, ২৫ শতাংশ কাজ বাকি। কিন্তু সেই কাজই আসল, বলছেন সংশ্লিষ্ট লোকজনেরা। তাঁরা জানান, রেল লাইনের উপরের অংশটিই তো এখনও হয়নি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ ডিভিশনের এক আধিকারিক বলেন, রেলের উড়ালপুলের গার্ডওয়াল কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। তবে উড়ালপুলের জন্য স্তম্ভগুলি কলকাতার একটি সংস্থার অধীনে তৈরি হয়েছে। রেলের আধিকারিকদের পরিদর্শন করে দেখার জন্য চিঠি দিয়েছিলেন, তার পরে কয়েক বার তদারকিও হয়েছিল, শেষে রবিবার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে আধিকারিকরা স্তম্ভগুলি খতিয়ে দেখেছেন। এখন অপেক্ষা ছাড়পত্রের।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের মালদহ ডিভিশনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওম বিহারী বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছিলাম মার্চ মাসের মধ্যে একটি লেন চালু করতে। কিন্তু উড়ালপুলের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। রেলের আধিকারিকরা উড়ালপুলের স্তম্ভগুলি দেখে গেছেন। এতে স্বস্তি। আশা করি, দ্রুত উড়ালপুলের কাজের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে।’’