প্রতীকী ছবি।
অভিযোগ ছিল দোলের দিন তৃণমূল নেতার ছেলের গায়ে অ্যাসিড মেশানো রং ছোড়ার। তার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে দার্জিলিং জেলা এসএফআই-এর সম্পাদক সাগর শর্মা এবং বাম যুব সংগঠনের নেতা আনারুল প্রামাণিককে। প্রায় ৫০ দিন হতে চললেও এখনও জামিন পাননি তাঁরা। শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে মামলাটি।
নেতাদের জামিন না মেলার ঘটনায় চলতি মাসের শুরু থেকেই আন্দোলনে নেমেছে সিপিএম। রাস্তায় নেমে চলেছে আন্দোলন। পাশাপাশি উচ্চ আদালতেও জামিনের আবেদন নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির বাম নেতারা। এই নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে একদফা কথাবার্তা সেরে নিয়েছেন দলের নেতারা। ১৪ মে পর্যন্ত আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলার কথা। তারপরেই জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে আবেদন করা হবে বলে ইঙ্গিত দলীয় সূত্রে। সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, ‘‘ছাত্র-যুব নেতাদের ফাঁসানোর প্রতিবাদে আন্দোলন চলবে। আমরা হাইকোর্টে যাওয়ারও প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ সিপিএমের অভিযোগ, ঝামেলার সময় সাগর এবং আনারুলদের মারধর করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের দেওয়া অভিযোগে পুলিশ কোনও মামলা রুজু করেনি।
সাগর এবং আনারুলদের আইনজীবী দিবাকর রায় জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬এ ধারায় মামলা হয়েছে। অ্যাসিড দিয়ে গুরুতর আঘাতের অভিযোগে জামিন সহজে হয় না বলে জানান তিনি। দিবাকর বলেন, ‘‘২৫ এপ্রিল থেকে কর্মবিরতি চলছে। অভিযুক্তদের হয়ে জামিনের আবেদন করতে পারছি না আমরা।’’ আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, অ্যাসিড হামলায় অভিযুক্ত হলে গ্রেফতার হওয়ার পরে ৯০ দিন পর্যন্ত আদালতে চার্জশিট পেশ করার সুযোগ থাকে। তার আগে পর্যন্ত জামিন দেওয়া বা না দেওয়া বিচারকের সিদ্ধান্তে হয়। ৯০ দিনের পরেও পুলিশ চার্জশিট পেশ করতে না পারলে জামিন পেতেও পারেন অভিযুক্তরা। তবে তার আগেই যাতে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যায় তার চেষ্টা করছে জেলা সিপিএম। দলীয় সিদ্ধান্তে ৬ মে থেকে মিছিল ও পথসভা শুরু করেছে সিপিএম এবং তাদের গণ সংগঠনগুলো। ২৫ এপ্রিল উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে শিলিগুড়িতে মিছিল করেছে এসএফআই। চলতি মাসেই খড়িবাড়ি, বাগডোগরায় প্রতিবাদ মিছিল, পথসভা করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দোলের দিন রাজীবনগরে বলরাম সরকারের বাড়িতে রং দেওয়া নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সাগর, আনারুল এবং ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সমীর ছেত্রীর ছেলে প্রীতেশ। দু’পক্ষের বচসা গড়ায় মারপিটেও। সমীর ছেত্রী এবং সাগর উভয়ের তরফেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সমীরের অভিযোগের ভিত্তিতে সাগর ও আনারুল-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত এখনও পলাতক। ঘটনার দিন পনেরো পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান প্রীতেশ। যদিও তাঁর পরিবারের দাবি তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি। প্রীতেশের বাবা সমীর ছেত্রী বলেন, ‘‘আমার ছেলের এখনও অসুস্থ। আমি চাই দোষীরা শাস্তি পাক।’’