বিধানসভা ভোটে ঠিকমতো দায়িত্ব না পাওয়ায় উত্তর দিনাজপুর জেলার সংগঠনে কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করল সিপিএম। ভোটের ফলপ্রকাশের পরে ইতিমধ্যেই ওই জেলায় বেশ কয়েক জন সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। এ বার ইসলামপুর জোনাল কমিটিই ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব।
সিপিএমের অন্দরে অভিযোগ, ইসলামপুর জোনাল কমিটির নেতৃত্বের একটি বড় অংশের ভূমিকাই নির্বাচনের সময়ে বিরূপ ছিল। দলের সদ্য অনুষ্ঠিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে: ‘উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর জোনাল কমিটির নেতৃত্বের একটি বড় অংশ গত বিধানসভা নির্বাচনে পার্টির অনুকূলে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করেনি। নির্বাচনের সময় থেকে এই জোনাল কমিটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।… ইসলামপুর বিধানসভা নির্বাচনে নেতৃত্বের একাংশের বিরূপ ভূমিকা এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে জোনাল পার্টির সাংগঠনিক অচলাবস্থার বিবেচনায় ইসলামপুর জোনাল কমিটি বাতিল করে সাংগঠনিক জোনাল কমিটি গঠনের জন্য জেলা কমিটির প্রস্তাবে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী অনুমোদনের পক্ষে মত দিয়েছে’। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে কেন দলে আলোচনা করে জেলা কমিটি বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠায়নি, তাতেও ক্ষুব্ধ আলিমুদ্দিন।
উত্তর দিনাজপুর জেলা নেতৃত্বের প্রতি আলিমুদ্দিনের নির্দেশ, জেলা স্তরে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। দলের গঠনতন্ত্র মেনে নতুন করে কমিটি গড়তে হবে এবং রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকে। সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনও কমিটি ভেঙে দেওয়া হলে আবার নতুন কমিটি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সাংগঠনিক কমিটি গড়ে কাজ চালানো হয়। সচরাচর পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত এই সাংগঠনিক ব্যবস্থাই বজায় থাকে। ইসলামপুরে কমিটি ভাঙার পাশাপাশিই উত্তর দিনাজপুরে রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে হেমতাবাদ বিধানসভা ক্ষেত্রভিত্তিক একটি নতুন জোনাল কমিটি গড়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই কমিটির নাম হবে ‘হেমতাবাদ জোনাল কমিটি’। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘উত্তর দিনাজপুর জেলায় সাংগঠনিক স্তরে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। দলের একাংশের ভূমিকা সেখানে দলের পক্ষে ছিল না। তাই কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।’’