এ পারে খোলা সীমান্ত। মাঝে বয়ে চলছে ধরলা। ও পারে বাংলাদেশ। অভিযোগ, কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় ওই খোলা সীমান্ত দিয়েই সন্ধে নামলে চ্যাংরাবান্ধায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে দুষ্কৃতীরা। চলছে গরু পাচারের রমরমাও।
সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ঝোপঝাড়। তাই লুকিয়ে থাকার সুবিধে পাচ্ছে পাচারকারীরা। পরিস্থিতির জেরে দ্রুত ওই এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
বিএসএফের একটি সূত্রের দাবি, ওই ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জমির বন্দোবস্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “ওই এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দিতে হলে জমি কিনতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে কী ভাবে সেই কাজ করা যায় তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।”
বাসিন্দারা জানান, চ্যাংরাবান্ধা ধরলা লাগোয়া চত্বরে প্রায় ৪ কিমি এলাকা পুরোপুরি উন্মুক্ত। বর্ষায় নদীর জল বাড়লে পাচারচক্রের রমরমা কিছুটা কম থাকে। কিন্তু বছরের অন্য সময় তা বেড়ে যায়। বিশেষ করে শীত ও গ্রীষ্মের সময়ে নদী পেরিয়ে সহজেই পাচারকারীরা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে গরু এ পার-ও পার করছে। এছাড়াও কাশির সিরাপ পাচারের একটি চক্রও সক্রিয় রয়েছে। নদীর বালি পাথরও তোলা হচ্ছে যথেচ্ছভাবে। মেখলিগঞ্জের প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেন, “কাঁটাতারের বেড়াহীন ওই এলাকা পাচারকারীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। আগে চ্যাংরাবান্ধা এলাকায় বাংলাদেশ থেকে ঢুকে পড়া সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলার অভিযোগও রয়েছে। দ্রুত কাঁটাতারের বেড়ার পাশাপাশি চ্যাংরাবান্ধায় থানাও দরকার।” মেখলিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধান বলেন, “ সীমান্ত সুরক্ষার ব্যাপারে কেন্দ্রের উদ্যোগ দরকার।” কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় জানান সীমান্ত সমস্যা নিয়ে সংসদে সরব হবেন।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই সমস্যা চললেও স্রেফ এমন চাপানউতোরই সার। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সন্ধে হলেই নজরদারি এড়িয়ে পাচারচক্রের দৌরাত্ম্য শুরু হচ্ছে। মোবাইলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে চলে কারবার। বিএসএফের এক কর্তা জানান, নজরদারি রয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া তৈরির ব্যাপারে সমীক্ষাও হয়েছে।