নবজাতক: সন্তান-সহ মা। নিজস্ব চিত্র
একটি ট্রাকে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরছিলেন অনেকেই। যাত্রাপথেই প্রসব বেদনা ওঠে আকলিমা বিবির। এই অবস্থায় সকলেই যখন দিশেহারা, তখন ত্রাতা হয়ে এগিয়ে এলেন বীরপাড়ার মহিলা পুলিশকর্মীরা। তাঁরাই আকলিমাকে নিয়ে যান বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু রবিবার বিশ্ব মাতৃ দিবসে হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে গাড়িতেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক, আকলিমা। হাসপাতালের সুপার বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন, ‘‘গাড়িতেই প্রসব করেন ওই মহিলা। তবে মা ও সদ্যোজাত দু’জনেই এখন সুস্থ।’’
অসমের কোকরাঝাড় জেলার বাসিন্দা আতোয়ার রহমান ও তাঁর স্ত্রী আকলিমা বিবি কয়েকমাস আগে কাজের সন্ধানে বিহারে যান। সেখানে দিনমজুরের কাজ করছিলেন তাঁরা। কিন্তু লকডাউনের জেরে গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে তাঁদের কাজ বন্ধ। এ দিকে তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হওয়ার পরে নিরুপায় হয়েই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন ওই দম্পতি। প্রথমে সন্তান সম্ভববা আকলিমা বিবিকে নিয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত আসেন আতোয়ার। সেখানে জড়ো হওয়া আরও কয়েক ন শ্রমিকের সঙ্গে একটি ট্রাক ভাড়া করে এ দিন সকালে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। কিন্তু এথেলবাড়ি নাকা পয়েন্টে পুলিশ ট্রাকটিকে আটকে দেয়।
পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাক আটকানোর পরে দেখা যায়, সেখানে গাদাগাদি করে অনেকেই রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শিশু ও মহিলাও ছিলেন। এরই মধ্যে আকলিমার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তার পরে আর দেরি করেননি বীরপাড়া থানার মহিলা পুলিশকর্মীরা। আতোয়ার বলেন, ‘‘এ দিন পুলিশকর্মীরা যে উপকার করলেন তা কোনওদিন ভুলব না। ওঁরা এই অবস্থায় সাহায্য না করলে আরও বড় বিপদ হয়ে যেত। স্ত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে ওঁরাই কাপড় থেকে শুরু করে সাবান, তেল ও সব সামগ্রীই কিনে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আমার হাতে কিছু টাকাও তুলে দিয়েছেন।’’
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার পরে সদ্যোজাত ও ওই দম্পতিকে অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।