মুখ্যমন্ত্রীর আর্জির পর সন্ধেয় শহরের অন্য এক প্রেক্ষাগৃহের ফাঁকা টিকিট কাউন্টার। নিজস্ব চিত্র
খোদ মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ। জনস্বার্থে তাই মঙ্গলবার থেকে ৩১ মার্চ সিনেমা হল বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়ে দিলেন কোচবিহারের হল মালিকদের একাংশ।
অথচ, করোনা উদ্বেগের আবহেও কোচবিহার শহর লাগোয়া এলাকার সিনেমা হলগুলিতে ভিড়ে কোনও টান পড়েনি। সোমবারও দর্শকদের আনাগোনা প্রায় একই রকম ছিল। কিন্তু এ দিন বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সমস্ত প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন। এই আর্জি মেনে আজ, মঙ্গলবার থেকেই জেলার অনেক হল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু অনেকেই এ ব্যাপারে দোলাচলে রয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সাংগঠনিক ভাবে আলোচনা করে ওই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চান। কারণ, অধিকাংশ হল মালিক এই আর্জি মানার ক্ষেত্রে বিরাট অঙ্কের আর্থিক লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
সিনেমা হল মালিকদের সংগঠন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের (ইম্পা) সদস্য এবং মাথাভাঙার একটি প্রেক্ষাগৃহের মালিক বিনোদ লাখানি বলেন, “আমরা ওই আর্জির কথা শুনেছি। মঙ্গলবার থেকেই সিনেমা হলের শো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতি তো হবেই। তাহলেও কিছু করার নেই।” শহরের আর এক সিনেমা হলের কর্ণধার অনুরাগ বাগাড়িয়া বলেন, “এটুকু বলতে পারি, প্রশাসন যে ভাবে বলবে সেইমতো আমরা পদক্ষেপ করতে চাইছি।” শহর লাগোয়া এলাকায় খাগরাবাড়ি এলাকার সিটি মলের সিনেমা হলের কর্ণধার মানিক বণিক বলেন, “আমাদের আসোসিয়েশনের মধ্যে আলোচনা করে পদক্ষেপ করতে চাই।তার পরেই জানাব।”
শহর ও লাগোয়া এলাকায় একাধিক প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে। শহরের দু’টিতে সকাল ১০টা নাগাদ প্রথম শো শুরু হয়। রাতের শো শুরু হয় পৌনে ৭টায়। ওই দুই হল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যদিনের মতো প্রতিটি শো-তেই প্রায় একই রকম সংখ্যায় দর্শক আসছিলেন। সোমবারেও একাধিক শোয়ে করোনার উদ্বেগের কোনও প্রভাব পড়েনি। শহরের অন্য একটি প্রেক্ষাগৃহের ম্যানেজার অজয় দেববক্সী বলেন, “রবিবার পর্যন্ত দর্শক সংখ্যার প্রভাব আমাদের হলেও সেভাবে পড়েনি। প্রশাসনের তরফে সোমবার সন্ধে পর্যন্ত বন্ধের আর্জি আসেনি। মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করা হবে।” কোচবিহারের আর একটি প্রেক্ষাগৃহের ম্যানেজার প্রবীর দাস “জনস্বার্থে প্রশাসনের আর্জি মেনে মালিকপক্ষ ইতিবাচক পদক্ষেপ করবেন বলেই আশা করছি। আর্থিক ক্ষতির চিন্তা থাকলেও কিছু করার নেই।”
দিনহাটার একটি প্রেক্ষাগৃহের ম্যানেজার নীলমণি সাহা অবশ্য বলেন, “মালিকপক্ষ বা ইম্পার তরফে কোনও নির্দেশ আসেনি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতো সমস্ত কাজ করা হবে।” স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সিনেমা হল বন্ধে রাজ্যেরও রাজস্ব ক্ষতি। তবু এই পরিস্থিতিতে সকলের সহযোগিতা করা দরকার বলে তিনি জানান।