প্রতীকী ছবি।
চা বাগানে শ্রমিকেরা একসঙ্গেই কাজে যান, চা পাতা তোলেন। আবার একসঙ্গেই কাঁচা পাতা ওজন করেন। তাঁদের থাকার ঘরগুলোও অনেক ক্ষেত্রেই খুব কাছাকাছি। করোনাভাইরাসে সংক্রমণ এড়াতে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরস্পরের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ মিটার দূরত্ব পরামর্শ দিচ্ছেন, সেখানে চা বাগানে তা আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বাগানে। করোনাভাইরাস রুখতে বাগানে কী পদক্ষেপ করা উচিত তা নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।
ডুয়ার্সের জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার দুই জেলায় ছড়িয়ে থাকা দেড়শোরও বেশি বাগানে কয়েক লক্ষ চা শ্রমিক কাজ করেন। চা বাগানে বসবাসরত পরিবারের হিসেবে সেই সংখ্যা শ্রমিক-পিছু পাঁচজনও ছাড়িয়ে যায়। এই বিরাট সংখ্যক চা শ্রমিকদের পরিবারের অনেকেই আবার দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত। কাজ বন্ধ থাকায় তাঁরাও বাড়ি ফিরছেন। তাই এই পরিস্থিতিতে চা বাগানে সংক্রমণ রুখতে কী করা উচিত, তা নিয়েও অনেকখানিই চিন্তিত চা বাগান মালিক সংস্থার কর্মকর্তারা।
‘ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ অব ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনে’র সচিব সঞ্জয় বাগচী নিজেও করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “বাগানের শ্রমিকদের আমরা সচেতন করতে নানা উপায় বের করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কেরল-সহ দক্ষিণের রাজ্য থেকে কাজ বন্ধ থাকায় চা শ্রমিকদের পরিবারের অনেকেই বাড়ি ফিরছেন। তাঁদের পরীক্ষার জন্যে ‘এক জানলা’ ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স এলাকার প্রধান কর্মকর্তা রামঅবতার শর্মা বলেন, “শ্রমিকদের সুস্থ রাখতে আমরা প্রচার করছি। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি আমরা।”
তবে এক জায়গায় বেশি শ্রমিকদের জমায়েত করে করোনা নিয়ে সচেতন করাটাও যেহেতু স্বাস্থ্য দফতর নিষেধ করেছে তাই কাজের ফাঁকেই প্রচারের নীতি নিয়েছেন অনেক ম্যানেজার। মোগলকাঁটা বাগানের ম্যানেজার মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা জমায়েত না করে কাজের ফাঁকে ফাঁকেই করোনা রুখতে সচেতনতার বার্তা দিচ্ছি।”
অধিকাংশ বাগানেই প্রশিক্ষিত চিকিৎসক নেই। বাগানগুলোর হাসপাতালও ধুঁকছে। তাই করোনা মোকাবিলায় বাগানের ভিতরে কতটা সাফল্য মিলবে তা নিয়েও সংশয় রয়েই যাচ্ছে।