আচ্ছন্ন: কুয়াশায় ঘেরা কোচবিহার শহর। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ল কোচবিহার। বুধবার ভোর থেকেই কুয়াশা পড়ে জেলায়। সকালে তা আরও ঘন হয়। সকাল সাড়ে ১০টাতেও জেলার বিভিন্ন এলাকা কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল। সেই সঙ্গে কনকনে হাওয়াও বইতে শুরু করে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনেকটাই কম। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও কম। তাই ঘন কুয়াশা পড়ছে।’’
এমন অবস্থায় পুলিশের তরফে গাড়ি চালকদের সতর্ক করার কাজ শুরু হয়েছে। বেশি রাত বা ভোরের দিকে পুলিশের টহলদারি ভ্যান গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালকদের চা খেতে উৎসাহ দিচ্ছে। আসলে ঘন কুয়াশা থেকে অনেক সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। সে দিক ভেবেই তৎপর হয়েছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘সব দিকেই নজর রাখা হচ্ছে। কুয়াশার মধ্যে গাড়ি চালানোর সময়ে চালকেরা যাতে সতর্ক থাকেন, তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’
এ বার কোচবিহারে শীতের পরিমাণ একটু বেশি। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বার কোচবিহারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে। এ দিনও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারা দিনই কার্যত ঠান্ডা ছিল। সাড়ে ১০টার পরে, ঘন কুয়াশা কেটে রোদ উঠতে শুরু করে। রোদের মধ্যেই অবশ্য হালকা কুয়াশা দেখা যায় জেলার বিভিন্ন জায়গায়। বেসরকারি বাসের এক চালক বলেন, ‘‘সকালে বাস নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু খুব আস্তে চালাতে হয়েছে। কোথাও কোথাও দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। পঞ্চাশ মিনিটের রাস্তা পৌঁছতে দু’ঘণ্টা সময় লেগেছে। তার পরেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়।’’
কুয়াশার জেরে যাতে ফসলের ক্ষতি না হয়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এই সময়ে আলু চাষ হয়। কোচবিহারের মতো জেলায় একাধিক বার আলু ধসার মুখে পড়েছে। তাই এ বার আগাম সতর্ক করা হচ্ছে চাষীদের। এই সময়ে কী-কী ওষুধ খেতে ছড়ানো হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি আধিকারিকেরা। কোচবিহার জেলার সহকারী কৃষি অধিকর্তা রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই মতো চললে আলুর ক্ষতি হবে না।’’