•বন্ধ: ঝাঁপ পড়েছে দোকানের। ইংরেজবাজার। নিজস্ব চিত্র
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক পানশালা এবং মদের দোকান। ধাবায় মদ দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দোকান-পানশালার মালিকদের দাবি, আবগারি দফতরের মৌখিক নির্দেশেই তাঁরা ঝাঁপ বন্ধ করেছেন। লিখিত কিছু তো নেই-ই। এর পরে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হবে কি না বা হলে কত দিনের মধ্যে, সে সব ব্যাপারে তাঁরা অন্ধকারে। কত দিনের মধ্যে নতুন জায়গায় দোকান সরাতে হবে, তা-ও কেউ স্পষ্ট করে বলছে না।
এই ধোঁয়াশা গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে। যেমন কোচবিহার। এই জেলায় এখন অবধি সাতটি দোকান বন্ধ করা হয়েছে। কোচবিহারের এক্সাইস লাইসেন্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিখিলানন্দ সাহা অবশ্য বলেন, “আবগারি দফতরের তরফে মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে দোকান বন্ধ করেছি। কিন্তু, এর পরে কী করব, কত দিনের মধ্যে নতুন জায়গায় দোকান সরানো যাবে, তা নিয়ে লিখিত কোনও নির্দেশ পাইনি।”
একই সমস্যা মালদহেও। এই জেলায় ৬১টি দোকান-পানশালা বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গ ফরেন লিকার অন-অফ শপ অ্যাসোসিয়েশনের মালদহ জেলা সম্পাদক পার্থ বসু বলেন, ‘‘এখন সরকার ও আবগারি দফতরের দিকে তাকিয়ে আছি পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য।’’ উত্তর দিনাজপুরে ৪০টি দোকান বন্ধ। তাদের মালিকদের পক্ষে জানানো হয়েছে, দ্রুত সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি না হলে তাঁরা আগামী দিনে কী ভাবে এগোবেন, সেটা ঠিক করতে পারছেন না। আলিপুরদুয়ারের মদ ব্যবসায়ীদের তরফে সলিল ঘোষও জানান, তাঁরা কী করবেন, বুঝতে পারছেন না।
কী বলছে কোর্ট
এক ঝলকে দেখুন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা
• জাতীয় ও রাজ্য সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে থাকা যে কোনও মদের দোকান ও পানশালা ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ
• যে সমস্ত হোটেলের মদ বিক্রির লাইসেন্স ছিল, বাতিল তাও
• নির্দেশ কার্যকর হবে সরকারি লজ ও হোটেলের ক্ষেত্রেও
• জাতীয় ও রাজ্য সড়কের ধারে থাকা যে শহরের জনসংখ্যা কুড়ি হাজারের কম, শুধু সেখানে এই দূরত্ব ধার্য হবে ২২০ মিটার
এই সংশয়ের মধ্যে এখনও শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড, সেবক রোডের ধারের কিছু পানশালা খোলা রয়েছে। যদিও বর্ধমান রোডের তিনবাতি মোড় বা ভক্তিনগরে জাতীয় সড়কের ধারের দোকানগুলি বন্ধ। অন্য দিকে, জলপাইগু়ড়িতে বহু জায়গায় দোকান বন্ধের সুযোগে শুরু হয়ে গিয়েছে কালোবাজারি। আবগারি দফতরের এক কর্তা এ কথা জানিয়ে বলেছেন, এই জেলায় বেশ কিছু ধাবা আছে, যারা লাইসেন্স ছাড়াই মদ বিক্রি করে। এই ধাবাগুলিতেও অভিযান চলবে এ বার।
তবে উত্তরবঙ্গের পুলিশ-প্রশাসনও আপাতত সেই তিমিরে। তাই আবগারি দফতর মৌখিক ভাবে নির্দেশ জারি করেছে। তাদের এক কর্তা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা জেনেই এই কাজ করেছি। না হলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে পারে!’’