রাস্তা সংস্কার নিয়ে প্রশ্নের মুখে গৌতম

শহর ও লাগোয়া এলাকার অন্তত ৩৯টি ছোট-বড় রাস্তা সংস্কার করে ম্যাস্টিক বসানো হয়েছে। সরকারি খাতে এর জন্য ব্যয় দেখানো হয়েছে অন্তত ৫৬ কোটি টাকা। তবে, শিলিগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র শরৎ বসু রোড দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকলেও সংস্কারের কাজ কেন হয়নি নাগরিক কনভেনশনে গিয়ে সে প্রশ্নই শুনতে হল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫৩
Share:

শহর ও লাগোয়া এলাকার অন্তত ৩৯টি ছোট-বড় রাস্তা সংস্কার করে ম্যাস্টিক বসানো হয়েছে। সরকারি খাতে এর জন্য ব্যয় দেখানো হয়েছে অন্তত ৫৬ কোটি টাকা। তবে, শিলিগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র শরৎ বসু রোড দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকলেও সংস্কারের কাজ কেন হয়নি নাগরিক কনভেনশনে গিয়ে সে প্রশ্নই শুনতে হল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে। শনিবার সন্ধ্যায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অরুণোদয় সঙ্ঘের মাঠে দলের প্রার্থীর সমর্থনে নাগরিক কনভেনশন করেছেন, মন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতমবাবু।

Advertisement

কংগ্রেসের অভিযোগ, ওয়ার্ডটি তাদের দখলে থাকায় পুরসভার প্রশাসক বোর্ড অথবা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর রাস্তা সংস্কারের কাজ করেনি। এ দিন তৃণমূলের উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক কনভেনশনে গিয়েও শরৎ বসু রোড নিয়ে ‘উপেক্ষা’রই অভিযোগ শুনতে হল মন্ত্রীকে।

এ দিন আইনজীবী সমর দাস মন্ত্রীকে তাঁর দফতরের থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়েই, প্রশ্ন করে জানতে চান, ‘‘শরৎ বসু রোডের সংস্কারের কাজ কবে হবে?’’ ওই রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় হাঁটাচলায় প্রতিনিয়ত সমস্যা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

Advertisement

মঞ্চ থেকে মন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি জানি। কাজের টেন্ডার হয়েছে। মে মাস থেকে হয়ত কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ মন্ত্রীর জবাব শুনেও হাততালি দিতে শোনা যায় বাসিন্দাদের।

এ দিনের কনভেনশনের শুরুতেই শহরের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার করে ম্যাস্টিক বসানোর খতিয়ান তুলে ধরেন মন্ত্রী। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনাও জানান তিনি। তবে, শরৎ বসু রোড নিয়ে যে শুধু বাসিন্দাদের নয় তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ দানা বেঁধেছে তা এ দিন টের পেয়েছেন মন্ত্রীও।

পুরসভায় প্রশাসক বোর্ড আসার পরে শরৎ বসুর রোডের একপাশে থাকা ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাজা রামমোহন রায় রোড, পাকুড়তলার রাস্তা অন্যদিকে, মন্ত্রীর নিজের ওয়ার্ড ১৭ নম্বরের কলেজপাড়ার বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার করে ম্যাস্টিক হয়েছে। দু’টি ওয়ার্ডই তৃণমূলের দখলে ছিল। মাঝের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডটি কংগ্রেসের দখলে থাকায় সে ওয়ার্ডটি বঞ্চিত থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা এ বারের প্রার্থী সুজয় ঘটকও।

এ দিনের কনভেনশনে মন্ত্রী দাবি করেছেন, রাজ্যের হাতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর, এসজেডিএ এবং পুর উন্নয়ন দফতর থাকায়, শিলিগুড়ি পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসলে উন্নয়নের কাজ দ্রুত গতিতে করা যাবে। ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী সুজয়বাবুর প্রশ্ন, ‘‘সব দফতর হাতে রেখেও শুধুমাত্র কংগ্রেসি ওয়ার্ড হওয়ায় যে এলাকার রাস্তার কাজ হয়নি তা মন্ত্রীর কথাই পরিষ্কার। এ কারণেই এতদিন শরৎ বসু রোড সহ ওয়ার্ডের অন্যান্য রাস্তা বঞ্চিত থেকেছে।’’

রাস্তা নিয়ে দলতন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা এবারের সিপিএমের মেয়র পদপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্যও। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের সময় আমরা ওয়ার্ডে দল দেখতাম না, উন্নয়ন মূল কথা ছিল।’’ দলতন্ত্র নিয়ে অবশ্য সিপিএমকেও ছাড় দিতে নারাজ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘সিপিএম দলতন্ত্রের পিসেমশাই ছিল, এখন তৃণমূল জ্যাঠামশাই হয়েছে। শরৎ বসু রোডের সংস্কার না হওয়ায় এমনই ভাবছেন বাসিন্দাদের অনেকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement