রাজ্য ভাওয়াইয়া উৎসবের প্রস্তুতি ঘিরে বিতর্ক চলছেই কোচবিহারে। আগামী ৫-৮ মার্চ দিনহাটা মহকুমার পেটলায় ওই উৎসবের দিন চূড়ান্ত হয়েছে। রবিবার কোচবিহার কল্যাণ ভবনে উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে এলাকায় ওই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে সেটি সিতাই বিধানসভা এলাকার আওতাধীন। অথচ অভিযোগ, ওই উৎসব কমিটিতে সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার নাম নেই। তার উপরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে কী করে উৎসবের দিন চূড়ান্ত করা হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
কোচবিহারের জেলাশাসক তথা উৎসব কমিটির সম্পাদক পি উল্গানাথন অবশ্য বলেন, “স্থানীয় বিধায়কের পরামর্শ নিয়েই উৎসবের কাজ করা হবে। চার দিকে ঘেরাটোপ করে ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে শব্দবিধি মেনেই অনুষ্ঠান হবে।” কোচবিহারের সাংসদ উৎসব কমিটির কর্তা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সবাই মিলেই অনুষ্ঠান আয়োজন করছি। বিতর্কের কিছু নেই।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই উৎসবের আয়োজন নিয়ে প্রাথমিক কমিটিতে নাম ছিল না কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়েরও। পরে অবশ্য নতুন কমিটিতে পার্থবাবুর নাম সংযোজন করা হয়। মাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে প্রস্তাবিত উৎসব ১৭ ফেব্রুয়ারি শুরুর কথা থাকলেও ওই তারিখও পিছিয়ে দেওয়া হয়।
ওই বিতর্কের রেশ মিটতে না মিটতে ফের এলাকার বিধায়কের নাম থাকা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘‘উৎসব কমিটিতে জেলার অন্য বিধানসভার বিধায়কদের নাম রয়েছে। ফলে স্থানীয় বিধায়কের নাম থাকবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। সংশোধিত নতুন কমিটিতেও ওই নাম না থাকায় অবাক লাগছে। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “পেটলায় ভাওয়াইয়া উৎসব আয়োজন হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে উৎসব কমিটিতে কে কে আছেন সে ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, ৩২টি এলাকায় ব্লক স্তরে ভাওয়াইয়া প্রতিযোগিতা সম্প্রতি শেষ হয়। প্রতিটি ব্লকের দু’টি বিভাগের চার জন করে প্রতিযোগী রাজ্যস্তরের ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দেবেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী রথীন রায়, সুজিতা রায়, অসমের হামিদা সরকার, জবা চক্রবর্তী-সহ চার জন আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে আসবেন।
প্রতিযোগীদের থাকার জন্য পেটলা হাইস্কুল ও পেটলা পঞ্চায়েতের হলঘর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য রাজ্য সরকার সাড়ে ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। পেটলার বাসিন্দারা জানান, ১৫ মার্চ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। তার আগে উৎসবে শব্দ তাণ্ডবের আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ থাকছে। প্রশাসনের আশ্বাসই আপাতত ভরসা।