ভোটের মুখে পরপর শিলান্যাসে বিতর্ক

কোথাও স্টল নির্মাণের কাজের সূচনা। কোথাও রাস্তা তৈরির শিলান্যাস। কোথাও আবার পানীয় জল প্রকল্পের কাজ শুরু। নাম পাল্টে ভোটের মুখে একের পর এক শিলান্যাস করার অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০১:৫৪
Share:

কোথাও স্টল নির্মাণের কাজের সূচনা। কোথাও রাস্তা তৈরির শিলান্যাস। কোথাও আবার পানীয় জল প্রকল্পের কাজ শুরু।

Advertisement

নাম পাল্টে ভোটের মুখে একের পর এক শিলান্যাস করার অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার একদিনে দশটির বেশি শিলান্যাস হয়েছে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায়। জেলা তৃণমূল সভাপতি বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ থেকে শুরু করে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা বিধায়ক হিতেন বর্মন, বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধানেরা সারা দিনই ব্যস্ত ছিলেন ওই কাজগুলির সূচনা নিয়ে। বিরোধীরা দাবি করেছেন, ওই শিলান্যাস ভোটের মুখে রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।

গত কয়েকদিন ধরেই কোচবিহার জুড়ে রাস্তা, মার্কেট কমপ্লেক্স, পানীয় জল প্রকল্পের কাজের সূচনার কাজ উদ্বোধন করা শুরু হয়। এ দিন ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকায় বলরামপুর বাজারে স্টল নির্মাণের কাজের সূচনা করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকায় চিলাখানা বাজারে স্টল নির্মাণ এবং মার্কেট শেড তৈরির কাজের সূচনা করেন। মাথাভাঙায় একাধিক কাজের শিলান্যাস করেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। মাথাভাঙা চৌপথীতে প্রায় সাড়ে কোটি টাকায় মার্কেট কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবন, ইমিগ্রেশন রোড মার্কেট কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবন, শীতলখুচি রোডের সুটুঙ্গা নদীর একটি অংশে বাঁধ বরাবর রাস্তা নির্মাণের কাজের সূচনা হয়। হলদিবাড়িতে স্টেডিয়ামের কাজের সূচনা করেন বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান।

Advertisement

সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “ভোটের মুখে শিলান্যাসের হিড়িক পড়েছে। এতদিন কোনও কাজে দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষকে টোপ দেওয়া হচ্ছে। মানুষ সব বুঝতে পারছেন। তাঁরাই এর জবাব দেবেন।” বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে ওই বিষয় ভোট প্রচারে উঠে আসবে বলে জানান। তিনি বলেন, “বাম আমলে একই কায়দায় ভোটের মুখে শিলান্যাস করা হত। পরে তা আর খুঁজে পাওয়া যেত না। তৃণমূল একই পথে হাঁটছে। এতদিন কোনও কাজ নেই। এখন প্রতিদিন কাজের সূচনা, শিলান্যাস শুরু হয়েছে।”

বিরোধীদের বক্তব্যকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সর্বত্র কাজ শুরু করা হচ্ছে। সেগুলির টাকা বরাদ্দের সঙ্গে কাজের নির্দেশ হওয়ার পরেই সূচনা করা হচ্ছে। আসলে বিরোধীর এত কাজ দেখে হতাশ হয়ে পড়েছে। তাই উলটোপালটা বকছে।” অনেকটা একই সুরে বিরোধীদের সমালচনা করেন বনমন্ত্রী বিনয়বাবু। তিনি বলেন, “বাম আমলে কোনও কাজ হয়নি। শিলান্যাসের পর শিলান্যাসের করে গিয়েছে তাঁরা। পরে সেই শিলান্যাসের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সর্বত্র উন্নয়নের জোয়ার বইছে। তা দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন তাঁরা।”

জেলা পরিষদের টাকাতেও কাজের সূচনা হয়েছে এ দিন। কোচবিহার সংলগ্ন জামতলায় সওয়া কোটি টাকায় পানীয় জলের জলাধার তৈরির কাজের সূচনা করেন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শুচিস্মিতা দেবশর্মা। বক্সিপাড়াতেও তিনি ২৪ লক্ষ টাকায় একটি পানীয় জল প্রকল্পের কাজের সূচনা করেন। আজ, মঙ্গলবারও একাধিক কাজের সূচনার অনুষ্ঠান রয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। শীতলখুচির বিধায়ক হিতেনবাবু জোরপাটকিতে পাঁচটি কংক্রিটের রাস্তা, শিবপুরে মাছের শেডঘরের কাজের সূচনা করবেন মঙ্গলবার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement