টানা চাপে নাজেহাল

মঙ্গলবার গভীর রাতে সিকিমের পাংথাঙের কাছে পর্যটক বোঝাই গাড়ি দুর্ঘটনার পর এমনই তথ্য সিকিম পুলিশের হাতে এসেছে। দুর্ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যুর পরে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চালক ঘুমের চোখে গাড়ি চালানো থেকেই সম্ভবত বিপদ।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ১২:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

গরমের পর্যটনের মরসুম শুরু হতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পাহাড়-সমতলের ছোট গাড়ি চালকেরা। অনেকেরই নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, গ্যাংটক বা ডুয়ার্সের নানা গন্তব্য, পর্যটকদের চাপে দম ফেলার সুযোগ নেই চালকদের। তাঁদেরই কয়েকজন জানাচ্ছেন, সকালে পাহাড় থেকে সমতলে নেমে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। কিন্তু তাঁরা তা করার ফুরসৎ পান না। তাড়াহুড়ো করে ভাড়া নিয়ে অনেকেই ফের পাহাড়ে চলে যান। পরের দিন ভোরে গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন স্ট্যান্ডে। অনেকে পাহাড় থেকে ডুয়ার্স হয়ে শিলিগুড়ি নেমে আবার যাচ্ছেন পাহাড়ে। টানা ডিউটির জেরে শারীরিক ভাবে সমস্যায় পড়ছেন বহু চালক। বাড়ছে বিপত্তি, নিরাপত্তার অভাব।

Advertisement

মঙ্গলবার গভীর রাতে সিকিমের পাংথাঙের কাছে পর্যটক বোঝাই গাড়ি দুর্ঘটনার পর এমনই তথ্য সিকিম পুলিশের হাতে এসেছে। দুর্ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যুর পরে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চালক ঘুমের চোখে গাড়ি চালানো থেকেই সম্ভবত বিপদ। টানা ডিউটি করে যাচ্ছিলেন ওই চালক। এতে দু’টি পরিবার প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে শেষ হয়ে গেল। পরপর ভাড়া ধরার জন্য চালকদের তো বটেই মালিকদের চাপেও এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে ওই পুলিশ অফিসারেরা মনে করছেন।

পূর্ব সিকিমের পুলিশ সুপার ডিবি গিরি বলেন, ‘‘নিরাপদে পর্যটকেরা যাতে সিকিম ঘুরতে পারেন, তা গাড়ির চালক, মালিক-পর্যটন সংস্থা সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।’’

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গ্যাংটকের দেওরালি, বাজরা, পেলিং স্ট্যান্ড থেকে ছোট্ট পাহাড়ি এলাকায় মূলত পর্যটকদের পাহাড়ি রাজ্যে ঘোরার ছোট গাড়ি ভাড়া নিতে হয়। এ ছাড়াও পশ্চিম এবং দক্ষিণ সিকিমেও একাধিক স্ট্যান্ড রয়েছে। ২৫ হাজারের মতো ছোট গাড়ি থাকলেও পর্যটন মরসুমে অভাব দেখা দেয়। নামচি, জোরথাং বা সিংতাম থেকে পূর্ব সিকিমের জন্য গাড়ি আসছে। বর্তমানে দার্জিলিং-সিকিম সার্কিট মিলিয়ে ৭০ হাজারের উপর দেশ বিদেশের পর্যটকেরা ঘুরছেন। সিকিমে অন্য রাজ্যের গাড়ি চলাচল করার নিষেধাজ্ঞা থাকায় চাপ আরও বেশি।

এই সুযোগে গাড়ি লুকিয়ে রেখে কালোবাজারি, বেশি ভাড়ার অভিযোগও ওঠে। তেমনই, পরপর ভাড়া ধরার প্রবণতা বাড়ায়, শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ছেন চালকেরা। পর্যটন সংগঠন এতোয়ার সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘বাইরের গাড়ি সিকিমে চলতে না পারায় আরও চাপ থাকে। এতে একাংশ চালক টানা ডিউটি করে চলেছেন। গাড়ি তো খারাপ হচ্ছেই, দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাডছে।’’

সিকিম লোকাল ট্যাক্সি ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এক মুখপাত্র জানান, তাঁরা বারেবারেই চালকদের সতর্ক করছি। শরীর ভাল করে পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই গাড়ি চালাতে হবে। সেখানে অত্যধিক গতিতে গাড়ি চালানো, মদ্যপান করা যাবে না। সমতলের বাগডোগরা বিমানবন্দর, এনজেপি, কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিষয়গুলি নজর রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিলিগুড়ির ডিসি (ট্রাফিক) সুনীল যাদবও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement