ভোটের ফল ঘোষণার আগে খুন কংগ্রেস কর্মী, শুরু তরজা

রাত পোহালেই ভোটের ফল ঘোষণা। তার ২৪ ঘন্টা আগেই খুনের ঘটনা ঘটল। নিহত সেবাজুল আলি(৪৫) আলিনগর পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের সদস্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ০১:৪৩
Share:

নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিহত কংগ্রেস কর্মীর দেহ। (ইনসেটে) নিহত সেবাজুল আলি।—নিজস্ব চিত্র।

রাত পোহালেই ভোটের ফল ঘোষণা। তার ২৪ ঘন্টা আগেই খুনের ঘটনা ঘটল। নিহত সেবাজুল আলি(৪৫) আলিনগর পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের সদস্য। মালদহের কালিয়াচক থানার আলিনগর পঞ্চায়েতের নবিনগর গ্রামের ঘটনা। দ্রুত ঘটনার তদন্তের দাবি তুলে এ দিন সকালে কালিয়াচক থানায় বিক্ষোভ দেখালেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। খুনের ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা যুক্ত বলে সন্দেহ কংগ্রেসের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা।

Advertisement

নিহত সেবাজুলের বাড়ি ওই পঞ্চায়েতের নবিনগরের পুরাতন টোলা গ্রামে। তিনি পেশায় আম ব্যবসায়ী এবং ইঁট ভাটার মালিক ছিলেন। খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ। এই বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে।’’ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

দীর্ঘদিন ধরেই সেবাজুলবাবুর কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন। সেবাজুলবাবুর পাঁচ ছেলে মেয়ে রয়েছে। প্রত্যেকেই পড়াশুনা করেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ন’টা নাগাদ খেয়ে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন সেবাজুলবাবু। সেই সময় তাঁকে তাঁর আম বাগানের কর্মী রাহুল শেখ ডাকতে আসেন। রাহুলের সঙ্গে রাতে সেবাজুলবাবু বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি। জানা গিয়েছে, ঘণ্টা দুয়েক বাদে রাহুল জামা কাপড় ছে়ঁড়া অবস্থায় সেবাজুলের বাড়িতে এসে জানায় কে বা কারা বাগান থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সেবাজুলবাবুকে। তখনই বাগান জুড়ে তল্লাশি শুরু করা হয়, পরে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে গ্রামেরই এক তুঁতের জমি থেকে উদ্ধার হয় সেবাজুলবাবুর ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ। মৃতদেহের মাথায়, গলা-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। নিহতের পরিবারের লোকেরা আটক করে রাখেন রাহুল শেখকে। পরে কালিয়াচক থানার পুলিশ গিয়ে রাহুল শেখকে আটক করে ও মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এ দিন সকালে সেবাজুলের ছেলে সায়েম বিশ্বাস রাহুল শেখের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কালিয়াচক থানায়। সায়েম বলেন, ‘‘গ্রামের কারও সঙ্গে আমার বাবার কোনও গোলমাল ছিল না। আমাদের অনুমান রাহুলই বাবাকে খুন করেছে। তবে কেন খুন করেছে তা আমরা বলতে পারব না।’’

Advertisement

এ দিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত কালিয়াচক থানায় বিক্ষোভ চলার সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়ে তাঁকে স্মারকলিপি দেন মোথাবাড়ির কংগ্রেসের বিদায়ী বিধায়ক তথা এবারের প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই কী কারণে খুন করা হল তার দ্রুত তদন্ত করুক পুলিশ।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘বিরোধীরা সব কিছুতেই রাজনৈতিক রঙ লাগানোর চেষ্টা করছে। তবে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয় ঘটনার সঙ্গে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement