প্রতীকী ছবি।
উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানকে ১৭ অগস্ট বদলির নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয় রাজ্যের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা (এডিএইচএস) কার্তিকচন্দ্র মণ্ডলকে। ২০ অগস্ট রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আরও একটি নির্দেশিকা জারি করে রবীন্দ্রনাথকে দ্রুত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পদে দায়িত্ব কার্তিককে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সোমবার কার্তিক কলকাতা থেকে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করেন। কার্তিকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলে দফতর থেকে বার হয়ে যান রবীন্দ্রনাথ। দিনভর রবীন্দ্রনাথের ঘরেই বসেছিলেন কার্তিক। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দায়িত্ব হস্তান্তর নিয়ে কার্তিকের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের চাপানউতোর চরমে উঠেছে।
এ দিন দুপুরে রবীন্দ্রনাথের ঘরে দীর্ঘ ক্ষণ একা বসেছিলেন কার্তিক। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্বভার কবে নেবেন? জবাবে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ফাঁকা চেয়ার দেখিয়ে কার্তিক বলেন, “উনি দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেই কাজ শুরু করব।”
রবীন্দ্রনাথের অবশ্য দাবি, এ দিন তিনি কার্তিককে তাঁর চেম্বারে অপেক্ষা করার অনুরোধ করে দাঁতের চিকিৎসককে দেখাতে গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সরকারি নথিতে এখনও আমার প্রচুর সই করা বাকি রয়েছে। তাই শনিবারের আগে ওঁকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্ব বোঝানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া আমাকে যেখানে বদলি করা হয়েছে, সেখানে রবিবারের আগে থাকার ঘরের বন্দোবস্ত হবে না। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসে করোনার উপসর্গ থাকা জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ১ অনুপ হাজরাকে পাশে নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রবীন্দ্রনাথ। সে দিন বিকেলেই অনুপের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। ওই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রবীন্দ্রনাথের বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। রবীন্দ্রনাথকে বীরভূমের রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পদে বদলি করা হয়েছে।
কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্ণমেন্ট এমপ্লয়িজের জেলা সম্পাদক সুযশ মুখোপাধ্যায় বলেন, “করোনা আবহে দায়িত্ব হস্তান্তর নিয়ে দুই স্বাস্থ্যকর্তার চাপানউতরে জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়বে বলে সংগঠনের তরফে আশঙ্কা করছি। দফতরের নথিতে সই বাকি থাকার যুক্তি দেখিয়ে দায়িত্ব ছাড়তে গড়িমসি করার বিষয়টি রহস্যজনক বলে আমাদের ধারণা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক।”