পার্থপ্রতিম রায়—ফাইল চিত্র
পরিবর্তনের পরেও মুছে ফেলা গেল না গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সেই চেনা ছবিটা!
অভিযোগ, পার্থপ্রতিম রায়কে জেলা সভাপতি ঘোষণা করার একদিন কাটতে না কাটতেই নতুন করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসতে শুরু করেছে কোচবিহারে। প্রবীণ নেতারাও নিজেদের ঘর গোছাতে আসরে নেমেছেন। অভিযোগ, শুক্রবার পার্থপ্রতিমের নির্দেশে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের হাড়িভাঙায় মহামিছিলের আয়োজন করে তৃণমূল। ওই মিছিলের আয়োজনকারীরা কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বিপক্ষের বলেই পরিচিত। দলেরই একটি অংশের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি হিসেবে পার্থপ্রতিমের নাম ঘোষণার পর থেকে কোচবিহার উত্তর, দিনহাটা এবং একাধিক জায়গায় পার্থ অনুগামীরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এ দিকে, যেখানে মহামিছিল হল সেখানকার বিধায়কই ডাক পেলেন না।
পার্থপ্রতিম অবশ্য আগেই জানিয়ে দেন, তৃণমূলে কোনও দ্বন্দ্ব তিনি রাখতে দেবেন না। প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেই দল পরিচালনা করবেন। তিনি বলেন, “দ্বন্দ্বের অভিযোগ একদম ঠিক নয়। আমাদের একটাই লক্ষ্য ২০২১ সালের নির্বাচন। সেই লক্ষ্যেই আমরা একসঙ্গে কাজ করব। এখনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। আঞ্চলিক ভাবে কোথাও কিছু হচ্ছে কি না তা আমার জানা নেই।” কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে অবশ্য ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর
অনুগামীদের দাবি, ওই মিছিলের বিষয়ে বিধায়ককে কিছু জানানো হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক প্রবীণ নেতা বলেন, “কোচবিহারে দল তরুণ নেতার উপরেই ভরসা রেখেছেন। তাতে প্রবীণদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। আগামীতে দ্বন্দ্ব কমাতে না পারলে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে হারের পর থেকেই কোচবিহারে সাংগঠনিক রদবদল শুরু করে দল। দল মনে করে, বিজেপি লোকসভায় জয়ী হওয়ার পরে যে সংগঠন কোচবিহারে তৈরি করেছে, তার সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার মতো সংগঠন তৈরি করতে না পারলে মুখ থুবড়ে পড়তে হতে পারে তৃণমূলকে। প্রথমটায় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। পার্থপ্রতিম রায়কে দলের জেলা কার্য়করী সভাপতি করা হয়।
তার পরে প্রায় এক বছর কেটে গিয়েছে। তাতে দলের সংগঠন আগের থেকে কিছুটা মজবুত হলেও তা দিয়ে ভোটে জেতা যাবে না বলেই মনে করছে দল। সে জন্যেই ফের নতুন করে সভাপতি নির্বাচন করা হয়। সেই সঙ্গে জেলা যুব সভাপতি পদেও
অভিজিৎ দে ভৌমিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পার্থ করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসায় গত সাতদিন ধরে বাড়িতেই রয়েছেন। এই অবস্থায় নতুন করে দ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠতে শুরু করায় কিছুটা হলেই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে জেলা নেতৃত্বের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতার কথায়, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যদি একইরকম থাকে, সে ক্ষেত্রে দলের দায়িত্বে পরিবর্তনেও কোনও লাভ হবে না।”