এই ভাবেই ভাঙা হয়েছে গাড়িটি। — নিজস্ব চিত্র
এক তৃণমূল নেতার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায়। রবিবার রাতে দেশবন্ধুপাড়া এলাকায় শম্ভু সিংহ নামে এক আইএনটিটিইউসি নেতার গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। কারা গাড়ি ভাঙচুর করেছেন তা স্পষ্ট না হলেও এনজেপিতে দলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তৃণমূলেরই একাংশ মনে করছেন।
সোমবার সকালে এনজেপি ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন শম্ভুবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, লিখিত অভিযোগে কারও নাম না লিখলেও দলের প্রসেনজিত রায় গোষ্ঠীর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শম্ভুবাবু। ক্রমাগত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অরূপরতন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমি খবর পেয়ে শম্ভুবাবুর বাড়ি গিয়েছিলাম। কারা এটা করেছে তা পরিস্কার নয়।’’ সংগঠনের কেউ এই ধরণের উস্কানিমূলক কাজ করলে তা মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। সংগঠনের মধ্যে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি
রবিবার রাতে দেশবন্ধুপাড়া এলাকায় শম্ভুবাবু বাড়ির সামনেই গাড়ি রেখে দেন। তাঁর দাবি, সকালে উঠে তিনি দেখেন তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। গাড়ির উপরে ইঁট ও পাথর পড়ে ছিল। শম্ভুবাবুর অভিযোগ, ‘‘কাউকে দেখিনি। তাই অভিযোগে নাম দিইনি। তবে সকলেই জানে কে এটা করিয়েছে। দলের নেতাদের সমস্ত জানিয়েছি। ওঁরাই দেখুক কী করা উচিত।’’ এ বিষয়ে প্রসেনজিতের বিরোধী গোষ্ঠীর জয়দীপ নন্দীও সরাসরি কারও নামে অভিযোগ করতে চাননি। প্রসেনজিতবাবুর দাবি, ‘‘এমন ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। বরং আমি ও আমার পরিবারই ভয়ের মধ্যে রয়েছি।’’ কিছু ঘটলেই তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ছ’মাস আগে এনজেপি এলাকার নেতা ও আইএনটিটিইউসির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির সভাপতি বিজন নন্দী মারা গেলে তাঁর ভাই জয়দীপ নন্দী ও বিজনবাবুর ছায়াসঙ্গী প্রসেনজিত রায়ের মধ্যে এলাকার দখল নিয়ে গোলমাল শুরু হয়। গোলমালের ফলে মাঝে মধ্যেই এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছে। অবস্থা সামাল দিতে প্রয়াত বিজনবাবুর জায়গায় ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লকের আইএনটিটিইউসির সভাপতি করা হয় জয়দীপবাবুকে। প্রসেনজিতবাবুকে সংগঠনের এনজেপি ইউনিটের সভাপতি করা হয়। কিন্তু তারপরেও গোলমাল মেটেনি। জয়দীপ ও প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে একাধিকবার একে অপরের এলাকা দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। জেলা নেতৃত্ব একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কোন্দল না মেটায় জেলা কোর কমিটি ছাড়া বাকি সমস্ত কমিটি ভেঙেও দেওয়া হয়েছে।